এক বন্ধুকে ফোন দিয়ে আমার সঙ্গে বের হওয়ার অনুরোধ করলাম। ও ব্যস্ত থাকায় আমাকে একাই বের হতে হল।
বাড়ি থেকে বেড়িয়ে কিছুদূর যেতেই ওই বন্ধুর সঙ্গে দেখা হয়ে গেল। ওকে হাতে পেয়ে আমি কি আর ছাড়ি? ওকে নানা কথা বলে রাজি করিয়ে ফেললাম।
ঠিক হল আমরা ফুচকা খাব। ফুচকা খেতে আমরা রিকশা করে আগ্রাবাদ ব্যাংকক মার্কেটে গেলাম।
একটা টেবিল ঠিক করে বসেছি। এমন সময় আমার বন্ধুটি বলল, বিদ্যা তোর পেছনের ছেলেটাকে দেখ। অনেকক্ষণ ধরে আমাদের পিছে পিছে আসছে। আমি দেখলাম সাদা টি শার্ট পড়া একটি ছেলে। দেখে বাজে মনে হল না।
আমি কিছুই বললাম না। ভাবলাম ওই ছেলের তো কাজ থাকতে পারে। তাই ব্যাপারটা এড়িয়ে গেলাম।
এরপর খাবারের দোকান থেকে বের হয়ে আমরা যেদিকে যাচ্ছি দেখলাম ছেলেটা পেছনে পেছনে সেদিকে যাচ্ছে। ব্যাপারটা বেশ বিরক্তিকর। তবুও কিছুই না বলে আমরা আমাদের মতো ঘুরছি। একটু পর পাশ কাটিয়ে যাওয়ার নামে ছেলেটি আমার বান্ধবীকে ধাক্কা দিল। এরপর আর চুপ করে থাকা গেল না। মেজাজ চড়ে গেল। আমি তাকে পেছন থেকে ডাক দিলাম। ও কোনো সাড়া না দিয়ে হাওয়া হয়ে গেল।
কিছুক্ষণ পর দেখি অন্য একটি ছেলেসহ আবার আমাদের পিছু পিছু আসছে। কথা বলব ভেবে আমি নিজেই দাঁড়িয়ে গেলাম। কিন্তু সে পাশ কাটিয়ে চলে গেল।
বাসায় ফেরার জন্য রিকশা ঠিক করছি এমন সময় দ্বিতীয় ছেলেটি এসে বলল, আপনি কি আমার বন্ধুকে ডাকছিলেন?
আমি বললাম, হুম। আপনার বন্ধু আমাদের পিছু নিয়েছে কেন?
উত্তরে বলল আপনার বন্ধুর পিছু নিয়েছি। আপনার তো নেইনি।
আমি আকাশ থেকে পড়লাম। রাস্তায় প্রকাশ্যে দাঁড়িয়ে পিছু নিয়েছি কথাটা উচ্চারণ করার সাহস ওরা কোথায় থেকে পায় জানি না। আমি তাকে কিছু বলতে চাইছিলাম কিন্তু মেজাজে কুলালো না। তাই রিকশায় উঠে গেলাম।
বন্ধুটিকে বাড়িতে নামিয়ে দিলাম। বাড়ি যাওয়ার পথে চিন্তা করলাম রাস্তায় যে কেউ চাইলেই একটা মেয়ের পিছু নিতে পারে। কী সহজ! মেয়েটিও মুখ বুজে সয়ে যায় আমার বন্ধুর মতো। আমি যতটুকু প্রতিবাদ করেছি ও ততটুকুও করেনি। কেন করে জানি না। হয়তো ভেবেছে লোকে খারাপ বলবে।
আমাকে বিরক্ত করেছে। আমি প্রতিবাদ করব। এতে খারাপ ভালোর কি আছে বুঝি না। আমরা যদি নিজের জায়গা থেকে প্রত্যেকে প্রতিবাদ করতে পারি এসব বখাটেরা একদিন হেরে যাবে।