যার রক্তদানে প্রাণ পেয়েছে ২৪ লাখ শিশু!

এ যেন এক সুপারম্যানের গল্প। লাখো শিশুকে জীবন দেওয়া এক সুপারম্যান। জেমস হ্যারিসন নামক এক অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক গত ৬০ বছর ধরে প্রতি সপ্তাহে রক্তদান করে যাচ্ছেন।
যার রক্তদানে প্রাণ পেয়েছে ২৪ লাখ শিশু!

অস্ট্রেলিয়ার রেড ক্রস ব্লাড সার্ভিসের মতে তার এ রক্তদানে এখন অবদি জীবন পেয়েছে প্রায় ২.৪ মিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান শিশু।

"ম্যান উইথ দ্য গোল্ডেন আর্ম" হিসাবে তিনি পরিচিত।

সিএনএন জানিয়েছে, মি. হ্যারিসনের রক্তে অনন্য, রোগ-প্রতিরোধী অ্যান্টিবডি রয়েছে যা অ্যান্টি-ডি নামে একটি ইনজেকশন তৈরি করতে ব্যবহার করা হয়েছে, যা রিসাস রোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সহায়তা করে।

যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস অনুসারে, রিসাস ডিজিজ এমন একটি অবস্থা যেখানে গর্ভবতী মহিলার রক্তে অ্যান্টিবডিগুলি তার শিশুর রক্তকণিকা ধ্বংস করে দেয়।  এই অবস্থার ফলস্বরূপ বাচ্চাদের মস্তিষ্কের ক্ষতি বা এমনকি মৃত্যুও হতে পারে।

এই রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করে এমন ইনজেকশনগুলি তৈরির জন্য, চিকিৎসককেরা হ্যারিসনের প্লাজমা নিয়ে যান এবং তার রক্তে লাল রক্তকণিকা ফিরিয়ে দেন।  এভাবেই তিনি প্রতি সপ্তাহে রক্ত দিতে পেরেছেন।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, অস্ট্রেলিয়ান রেড ক্রস ব্লাড সার্ভিসের জেমা ফ্যালকেনমার বলেছেন, "রক্ত অবশ্যই মূল্যবান, তবে হ্যারিসনের রক্ত বিশেষ করে মূল্যবান, অসাধারণ।  তার রক্ত আসলে জীবন রক্ষাকারী ওষুধ তৈরি করতে ব্যবহৃত হয়।"

মাত্র ১৪ বছর বয়সে তার বুকে অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল। তখন তার প্রচুর রক্তের প্রয়োজন হয়।

রক্তদান তার জীবন বাঁচায়, তাই তিনি রক্তদাতা হওয়ার প্রতিশ্রুতি নেন।

কয়েক বছর পরে, ডাক্তাররা আবিষ্কার করলেন যে তার রক্তে এমন এক ধরণের অ্যান্টিবডি রয়েছে যা দিয়ে অ্যান্টি-ডি ইনজেকশন তৈরি করা যেতে পারে।

তার এই অবদানের জন্য তাকে অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় নায়ক হিসাবে বিবেচনা করা হয়।

তিনি তার মহানুভবতার জন্য অসংখ্য পুরষ্কার জিতেছেন, যার মধ্যে রয়েছে দেশের অন্যতম সম্মানজনক পুরষ্কার, মেডেল অফ দ্য অর্ডার অফ অস্ট্রেলিয়া।

অস্ট্রেলিয়ার নিয়মানুযায়ী, ৮১ বছর পর্যন্ত একজন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষ রক্তদান করতে পারবেন। যে হিসাবে, ২০১৮ সালের মে মাসে ৮১ বছর বয়সে তিনি তার জীবনের শেষ রক্তদান করেন।

তার আশা তরুণেরা রক্তদানে উৎসাহী হবে এবং রক্তদানের মাধ্যমে অনেকের প্রাণ বাঁচাতে সাহায্য করবে।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com