পাকিস্তানে প্রায় নয়শ শিশু এইচআইভিতে আক্রান্ত

সম্প্রতি পাকিস্তানের রতেদেরোতে শিশুদের উপর এক ভয়াবহ রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটেছে। প্রায় দুই লক্ষ মানুষের বাস করা এ এলাকায় প্রায় ১১০০ মানুষের ভয়াবহ এইচআইভি (HIV) পজিটিভ ধরা পড়েছে। যার মধ্যে ৯০০ জন শিশু রয়েছে।
পাকিস্তানে প্রায় নয়শ শিশু এইচআইভিতে আক্রান্ত

নিউইয়র্ক টাইম বলছে, আক্রান্ত শিশুদের বয়স ১২ বছরের কম বয়সী!

তবে চিকিৎসকের আশঙ্কা প্রকৃতপক্ষে এই সংখ্যা আরও বেশি হবে। রতোদারো শহরটিতে পাকিস্তানের সবচেয়ে গরীব ও দুস্থ মানুষের বসবাস।

ঘটনাটি প্রথম সামনে আসে এপ্রিলে। যখন স্থানীয় সাংবাদিক গুলবাহার শাইখ দেখেন, তার প্রতিবেশী ও আত্মীয় স্বজনরা এই ভাইরাস শনাক্তকরণে হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোর দ্বারস্থ হতে থাকে।

যখন কর্মকর্তারা এই ঘটনা তদন্ত করতে বের হলেন, তখন তারা কথা বললেন সেখানকার এক শিশু বিশেষজ্ঞ মুজাফফার ঘানঘরোর সঙ্গে। যিনি সেই শহরের গরীব পরিবারগুলোকে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছিলেন এবং প্রাদুর্ভাব এলাকায় অবস্থান করছিলেন।

ঘানঘরোর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি একই সিরিঞ্জ ও সূচ একাধিকবার ব্যবহার করেছেন।

পাকিস্তান পুলিশ অবহেলা, হত্যাযজ্ঞ এবং অনিচ্ছাকৃত ক্ষতি করার জন্য অভিযুক্ত হয়ে গ্রেপ্তার করা হয় ঘানঘরোকে। তবে তাকে এখনও দোষী সাব্যস্ত করা হয়নি এবং দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসকে দেওয়া একটি সাক্ষাতকারে তিনি জোর দিয়েছিলেন যে তিনি নির্দোষ এবং তিনি কখনও সিরিঞ্জ পুনরায় ব্যবহার করেননি।

তবে স্বাস্থ্যকর্মীরা শুধুমাত্র ঘানঘরোকে দোষ দিতে নারাজ। তারা মনে করছেন, অনেক চিকিৎসকেরাই এখনো একই সিরিঞ্জ ও সূচ পুনরায় ব্যবহার করছেন। এছাড়াও নাপিতেরা একই রেজার দিয়ে বিভিন্ন মানুষের চুল, দাঁড়ি, গোঁফ কাটছেন এবং রাস্তার ধারের দন্ত ডাক্তারেরা রোগীদের দাঁত বাহিরে ফেলার কারণেও এমনটা ঘটতে পারে৷

মহামারী আকার ধারণের পর বিভিন্ন দেশ থেকে আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্যকর্মীরা সাহায্যর জন্য রতোদারো শহরে এসেছিলেন। এবং বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থা কয়েকশত টেস্টিং কিট দিয়েছে।

সরকারি ভবনগুলোতে পরীক্ষা কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছিল এবং পরীক্ষার জন্য বাসিন্দাদের জন্য পুরো শহরজুড়ে প্রায় শতাধিক হলুদ তাবু তৈরি করা হয়েছিল।

এ অবস্থা মোকাবেলায় পাকিস্তান গত মে মাসে অযোগ্য চিকিৎসক ও অবৈধ রক্ত সংগ্রহ করার ক্লিনিকগুলো বন্ধ করে দেওয়া শুরু করে। এদের প্রায় সবার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল তারা সিরিঞ্জ ও সূঁচ একাধিকবার ব্যবহার করেছিলেন। তবে স্থানীয়রা বলেন, কয়েকমাস পরে সেই ক্লিনিকগুলো আবার চালু করা হয়েছিল।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com