১৯৩৮ সালে ২৯ বছর বয়সে তিনি প্রাগে যান এবং সেখানকার বিপন্ন শিশুদের দেখভাল করেন৷
তিনি সেখানে বেশ কিছু পরিবার দেখতে পান এবং শিশুদেরকে বাঁচানোর জন্য তালিকা করা শুরু করেন৷ তিনি একটি বই বানিয়ে ফেলেন, যেখানে তার সাহায্য বেঁচে যাওয়া সব শিশুর নাম, পরিচয় ও ছবি রাখা হয়।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে নাৎসিদের ডেথ ক্যাম্পের হাত থেকে শিশুদের বাঁচাতে তিনি ট্রেনের ব্যবস্থা করেন৷ সেই শিশুদেরকে পরে তৎকালীন ব্রিটেন তথা ইংল্যান্ডে আশ্রয় পেতে সাহায্য করেন৷ নাৎসি মৃত্যু ক্যাম্প থেকে তিনি ৬৬৯ জন শিশুকে বাঁচিয়েছিলেন।
এই শিশুদের আশ্রয় দিতে এর আগে তিনি আমেরিকার কাছে আবেদন করেন। কিন্তু আমেরিকা তা বারবার প্রত্যাখান করে৷ এরপর বিট্রিশ সরকার তাদেরকে অনুমতি দিলে এই শিশুদের ঠাঁই হয় বিট্রেনে।
তার এই মানবসেবার কথা তিনি সমাজের কাউকেই জানাতে চান নি। প্রায় ৫০ বছর তার এ মহান কর্মের কথা কেউ জানত না। কিন্তু একদিন তার স্ত্রী এই শিশুদের পরিচয় ও তার মহান কাজের কথা জেনে যান।
নিকোলাস উইনটন বলেছিলেন, "যদি আমাদের কোনো সুযোগ নাও থাকে তবুও আমাদের সব সময় প্রস্তুত থাকতে হবে অন্যদেরকে সাহায্য করার জন্য।"
১৯৮৮ সালে বিবিসি'র একটি টিভি প্রোগ্রামে নিকোলাস উইনটনকে প্রধান অতিথি হিসাবে দাওয়াত দেওয়া হয়৷ তার বসার পাশের চেয়ারে ছিলেন সেই সময়ে তার মাধ্যমে বেঁচে যাওয়া একজন। যার নাম ভেরা। পরিচয় পাওয়ার পর আনন্দে তিনি নিকোলা কে জড়িয়ে ধরেন। সেই আবেগঘন আনন্দময় সময়ে সেই টিভি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তার সাহায্য বেঁচে যাওয়া আরো অনেকেই। যেখানে সবাই দাঁড়িয়ে তাকে সম্মান প্রর্দশন করেন৷ তাদেরকে দেখে নিকোলাস উইনটন চোখে পানি আটকে রাখতে পারেননি।
২০১৪ সালে ১০৫ বছর বয়সে তিনি চেক রিপাবলিকের সর্বোচ্চ সম্মানজনক পুরস্কার পান। এছাড়াও ৯২ বছর বয়সে ইংল্যান্ডের রাণীর কাছে "নাইটস" খেতাব অর্জন করেন তিনি৷
১০৬ বছর বয়সে এই মহান ব্যক্তি ইন্তেকাল করেন৷