জলবায়ু পরিবর্তন ও গ্রেটা থার্নবাগ

গত ২৩ শে সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের বিশ্ব জলবায়ু অ্যাকশন সামিট ২০১৯ আয়োজন করা হয়েছে জাতিসংঘের সদর দপ্তর যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে।
জলবায়ু পরিবর্তন ও গ্রেটা থার্নবাগ

সেখানে উপস্থিত ছিল ১৬ বছর বয়সী সুইডিশ পরিবেশকর্মী গ্রেটা থার্নবাগ। যেখানে উপস্থিত থাকা ডোনাল্ড ট্রাম্পসহ বিশ্বনেতা ও ব্যবসায়ীদের রীতিমতো শাসিয়ে তুলেছে এই কিশোর পরিবেশকর্মী৷

মাত্র ১৬ বছর বয়সেই পৃথিবীকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে এ কিশোরী সুইডিশ পরিবেশকর্মী। ছোট বেলায় অটিজম রোগ ধরা পড়লেও, তা তার কাজে বাধা তৈরি করতে পারেনি।

বিশ্বনেতাদের উদ্দেশ্য তিনি বলেন, "তোমাদের এই মিথ্যা আশ্বাস, ধোকা এখন তরুণ সমাজ বুঝতে পারছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এখন তোমাদের দিকে তাকিয়ে।

“এবং, তোমরা যদি আমাদেরকে মিথ্যা প্রমাণিত করো তাহলে আমরা কখনোই তোমাদেরকে ক্ষমা করব না।

“পৃথিবীর মানুষেরা এখন জেগে উঠছে। এবং পরিবর্তন অবশ্যই আসবে। সেটা তোমরা চাও বা না চাও।"

তার এ ভাষণের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ট ট্রাম্প টুইট করেন, " সে একটি উজ্জ্বল এবং দুর্দান্ত ভবিষ্যতের প্রত্যাশায় করছে। এটা খুবই ভালো!"

২০১৮ সালে টাইম ম্যাগাজিন বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী ২৫ জন কিশোর-কিশোরীর তালিকায় স্থান দিয়েছে। এত সব অর্জনের পর গ্রেটা থার্নবাগ এরই মধ্যে বিভিন্ন দেশে পুরষ্কার গ্রহণে অনীহা প্রকাশ করছেন শুধুমাত্র উড়োজাহাজে চড়তে হবে বলে। তার মতে, উড়োজাহাজ প্রচুর কার্বন নিঃসরণ করে, যা পরিবেশের জন্য হুমকিস্বরুপ।

জলবায়ু অ্যাকশন সামিটে গ্রেটা আরও বলে, "আমার এখন এখানে থাকার কথা ছিল না। আমার এখন থাকার কথা ছিল সমুদ্রের ওপারে আমার স্কুলে। তবুও তোমরা আমাদের (তরুণ) কাছে আশা নিয়ে এসেছো! কী দুঃসাহস তোমাদের! তোমাদের ফাঁকা বুলি আমার স্বপ্ন ও ছোটবেলা কে ধ্বংস করে দিয়েছে।

"আমরা এখন গণবিলুপ্তির পথে এগিয়ে যাচ্ছি, আর তোমরা শুধু টাকার ব্যাপারেই কথা বলে যাচ্ছো এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের রুপকথার গল্প শোনাচ্ছো। কী দুঃসাহস তোমাদের!"

জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার জন্য কোন উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না বলে ২০১৮ সালে ২০ অগাস্ট সে সিদ্ধান্ত নেয় ক্লাসে না যেয়ে আন্দোলনে নামবে। মূলত রাজনীতিবিদদের জলবায়ু সমস্য নিয়ে গ্রেটার এ ধরনের উদ্দ্যেগে সাড়া দিয়েছে অনেক স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে নানা বয়সী মানুষজন। ‘#fridaysforfuture’ হ্যাশ ট্যাগে সাড়া দিয়েছেন বিশ্বের লাখো মানুষ।  

তার এ প্রচেষ্টার জন্য চলতি বছরের প্রথম দিকে তাকে নোবেলে শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়েছিল।

নিজের কাজের প্রতি এমন দায়বদ্ধতা যদি গ্রেটা থানর্বাগ ধরে রাখতে পারেন, তাহলে ভবিষ্যতে কেবল নোবেল পুরস্কারই নয়, আরো অনেক কিছুই অপেক্ষা করে থাকবে তার জন্য। বিশ্বকে এই  বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষায় তার মতো কিশোর-কিশোরীদের এগিয়ে আসা উচিত। 

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com