হিরোশিমার বিভীষিকা 

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের এক ভয়াবহ ঘটনার সাক্ষি জাপানের হিরোশিমা। ১৯৪৫ সালের ৬ অগাস্ট ‘লিটল বয়’ নামক একটি পারমাণবিক বোমার বিস্ফোরণ ও পরবর্তী পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ফলে হিরোশিমা শহরটি পরিণত হয়েছিল মৃত্যুকূপ ও ধ্বংসযজ্ঞে। 
হিরোশিমার বিভীষিকা 

নামে লিটল হলেও এর ভয়াবহতা ছিল অবর্ণনীয়। এটি ছিল বিশ্বের প্রথম পারমাণবিক বোমা হামলা। এই ধ্বংসযজ্ঞে নিহত হয়েছিল এক লক্ষ ৪০ হাজার মানুষ। প্রতি বছরের ৬ অগাস্ট নিহতদের স্মরণ করে পালন করা হয় হিরোশিমা দিবস।

তখন চলছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। হিরোশিমার ঘড়িতে সকাল ৮ টা ১৬ মিনিট। হিরোশিমার কেউ তখনও ঘুমে। কেউ পেয়েছেন সকালের আলোর ছোঁয়া। এমন সময় প্রলয়ঙ্কারী এ বিস্ফোরণ।

এ বোমা হামলাটি চালিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। বিশ্বযুদ্ধে জাপানকে আত্মসমর্পণ করানোর জন্য এ হামলা চালানো হয়।

মার্কিন বি-টুয়েন্টি নাইন বোমারু বিমান এনোলা গে থেকে পারমাণবিক বোমাটি ফেলা হয়। মুহূর্তেই ধোঁয়ায় ছেয়ে যায়  হিরোশিমা নগরী। 

এ বোমা হামলায় আহত হয়েছিলেন অসংখ্য মানুষ। ৩৫ হাজার মানুষ এ বোমা হামলায় বিকলাঙ্গ হন। তাৎক্ষণিকভাবে ৮০ হাজার ও এর প্রভাবে পরবর্তীতে প্রায় ৬০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। 

হিরোশিমাতে ভবন ছিল ৯০ হাজার। কিন্তু বোমা বিস্ফোরণের পর টিকেছিল মাত্র ২৮ হাজার। পারমাণবিক বোমার বিস্ফোরণটি চিকিৎসা, শিক্ষা- সবক্ষেত্রেই হিরোশিমার জন্য এক বিশাল ধাক্কা ছিল। নগরীতে দুশো জন চিকিৎসক ছিলেন। কিন্তু বিস্ফোরণের পর কর্মক্ষম ছিলেন মাত্র ২০ জন। 

হিরোশিমার রেশ কাটতে না কাটতেই এর তিনদিন পর আবারো পারমাণবিক হামলার শিকার হয় জাপান। হিরোশিমা থেকে প্রায় তিনশ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত নাগাসাকিতে পারমাণবিক বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। সেই বিস্ফোরণে নিহত হয়েছিল প্রায় ৭৬ হাজার মানুষ। 

এ বিস্ফোরণের প্রভাবে হিরোশিমা নগরীতে লিউকোমিয়া ও ক্যান্সার রোগীদের সংখ্যা বেড়ে যায়।  

হিরোশিমা দিবসে নিহতদের স্মরণে হিরোশিমার গ্রাউন্ড জিরোতে স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। শোক প্রকাশের উদ্দেশ্যে সকাল ৮ টা ১৬ মিনিটে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com