লিংকন আরও অনেক কথাই বলেছিলেন যেগুলো মানবজাতিকে এগিয়ে দিয়েছে। এদেরই মধ্যে একটি কথা, ‘প্রত্যেককে বিশ্বাস করা বিপজ্জনক। কিন্তু কাউকে বিশ্বাস না করা আরও বেশি বিপজ্জনক।’
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ১৬তম রাষ্ট্রপতি অব্রাহাম লিংকন। তিনি ছিলেন রিপাবলিকান পার্টির প্রথম রাষ্ট্রপতি ও দাস প্রথার চরম বিরোধী ও প্রতিবাদী চরিত্র। এমনকি ১৮৬৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রে তিনিই দাস প্রথার অবসান ঘটান ও এবং মুক্তি ঘোষণার মাধ্যমে দাসদের মুক্ত করে দেন।
এই প্রথাকে কেন্দ্র করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গৃহযুদ্ধের সময় উত্তরাঞ্চলীয় ইউনিয়ন বাহিনীকে নেতৃত্ব দিয়ে দক্ষিণের কনফেডারেট জোটকে পরাজিতও করেন তিনি।
বীরত্ব, অসাধারণ নেতৃত্ব গুণ, বাগ্মিতা, দূরদর্শিতার অধিকারীও ছিলেন আমেরিকার এই ১৬তম প্রেসিডেন্ট। শুধ নেতৃত্ব দান নয়, ইলিনয় সৈন্যবাহিনীতে তিন মাস কাজ করার অভিজ্ঞতাও আছে এই মানুষটির।
লিংকন ১৮৬০ সালে রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী হিসাবে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী প্রথম রাষ্ট্রপতি এই মানুষটি ১৮৬১ থেকে ১৮৬৫ খ্রীস্টাব্দ পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন।
কালজয়ী এ মানুষটির জন্ম হয় ১৮০৯ সালের ১২ই ফেব্রুয়ারি। ১৮৬৫ সালের ১৫ই এপ্রিল জন উইলকস বুথ নামের এক আততায়ীর হাতে তিনি মারা যান। তবু জন্মের প্রায় দুশ’ বছর পরেও তিনি যে কোনো অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের প্রেরণা।
তিন মিনিটে দুশ’ ৭২ শব্দের এক জ্বালাময়ী ভাষণ দিয়ে তিনি আজও ইতিহাসের পাতায় অমর হয়ে রয়েছেন।
নেতৃত্বদানের ক্ষমতার দেখা মিলেছে তার শিশুবয়স থেকেই। বিদ্যালয়ে পড়ার সময় বন্ধুদের জড়ো করে নিজে উঁচু জায়গায় দাঁড়িয়ে বক্তৃতা দিতেন।
তবে তার শিক্ষাজীবনের সময়সীমা ছিল এক বছরেরও কম। আর্থিক অনটনের কারণে তাকে পড়া ছাড়তে হয়। পরে নিজে নিজেই শেক্সপিয়ার পড়েন। এতে করে তার ভাষাগত দক্ষতা অর্জিত হয়।
চার সন্তানের জনক লিংকনের তিন সন্তানই ১৮ বছর বয়স হওয়ার আগেই মারা যায়। মাত্র একজন সন্তানই ১৮ বছরের বেশি সময় ধরে বেঁচে ছিল।
লিংকন তার বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে পুত্রের শিক্ষককে লেখা একটি চিঠিতে লিখেছিলেন, ‘সব মানুষ ন্যায়পরায়ণ নয়, সব মানুষ সত্যনিষ্ঠ নয়। প্রত্যেক শত্রুর মাঝে একজন বন্ধু থাকে। প্রত্যেক স্বার্থপর রাজনীতিকের মাঝে একজন নিঃস্বার্থ নেতাও থাকে। আমার পুত্রকে আপনি এই শিক্ষায় শিক্ষিত করুন। তাকে পরাজয়কে মেনে নেওয়ার শিক্ষা দিন।’