জলবায়ু পরিবর্তন রোধে সোচ্চার হতে হবে এখনই

পরিস্থিতি যখন এমন ভয়াবহ তখন জলবায়ুর এই পরিবর্তন মোকাবেলায় কতটুকু সচেতন আজকের শিশুরা?
প্রতিনিধিত্বশীল ছবি
প্রতিনিধিত্বশীল ছবি

পৃথিবীর মানুষের সামনে এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ যেন জলবাযু পরিবর্তন মোকাবেলা করা। বাংলাদেশ এর বাইরে তো নয়ই বরং আমাদের অবস্থা আরো ভয়াবহ।

বিশ্ব ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী পৃথিবীতে মোট উৎপাদিত গ্রিনহাউজ গ্যাসের এক ভাগেরও কম গ্রিনহাউজ গ্যাস উৎপন্ন হয় বাংলাদেশে। তারপরও, বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম।

ইউনাইটেড স্টেট্স এনভারনমেন্টাল প্রোটেকশন এজেন্সির এক সমীক্ষা থেকে জানা যায় যে, ১৯৯৩ সাল থেকে এখন পর্যন্ত প্রতি বছর শূন্য দশমিক ১২ থেকে শূন্য দশমিক ১৪ ইঞ্চি করে গড়ে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ছে।

বাংলাদেশ জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর এক গবেষণা পত্রে জাতিসংঘ গঠিত জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক আন্তঃসরকার প্যানেলের (আইপিসিসি) বরাত দিয়ে বলা হয়েছে যে, সমুদ্রপৃষ্ঠের এই উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে বাংলাদেশের প্রায় ১০ দশমিক নয় শতাংশ ভূমি পানিতে ডুবে যাবে এবং উপকূলীয় অঞ্চলের প্রায় ৫৫ লক্ষ মানুষ বসতি হারাবে।

পরিস্থিতি যখন এমন ভয়াবহ তখন জলবায়ুর এই পরিবর্তন মোকাবেলায় কতটুকু সচেতন আজকের শিশুরা? তাদের কি প্রস্তুত করা হচ্ছে?

এ ব্যাপারে হ্যালো ডট বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা হয় সিলেট শহরের একটি স্কুলের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী অদিতী চক্রবর্তীর সাথে।

সে হ্যালোকে বলে, জলবায়ুর পরিবর্তন যে নানান সমস্যার জন্ম দিচ্ছে এটা সে জানে।

অদিতীর মতে গাছ লাগানো ছাড়া জলবায়ু পরিবর্তন রোধে আর কী করা উচিত সে বিষয়ে তার স্পষ্ট কোনো ধারনা নেই।

কথা হয় বান্দরবান শহরের একটি রিসোর্টে কর্মরত কিশোর মং মারমার সাথে। পাহাড় কাটলে ভূমি ধস হতে পারে এটা জানা থাকলেও প্রাকৃতিক বন নষ্টের ফলে কী কী ক্ষতি হতে পারে এটা সে জানে না।

কথা হয় বরিশালের উদয়ন মাধ্যমিক স্কুলের দশম শ্রেণিতে পড়ুয়া মুহিনের সঙ্গে। গ্রিনহাউজ গ্যাসের কারণে জলবায়ুর পরিবর্তন হচ্ছে, পাঠ্যবইয়ে এটা পড়লেও আমাদের দেশে এর প্রভাব কতটা তা সে জানে না।

সে বলে, “জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে আমার এখনো কোনো ক্ষতি হয় নাই। কিন্তু বন্যা, ঝড় এগুলো বেড়েছে।”

তবে জলবায়ুর পরিবর্তন নিয়ে বেশ সচেতন বাগেরহাটের মৌমি বনিক। সে কচুয়ার মোবাইদুল ইসলাম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। সে বলে, “জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে আমাদের ছয়টি ঋতু আর নেই। সময় অসময়ে ঝড় হচ্ছে, বন্যা হচ্ছে।”

সে মনে করে গাছ কাটা, কয়লা পোড়ানো, নদী ভরাট বন্ধ না করলে সামনে আমাদের জন্য মহা বিপদ অপেক্ষা করছে।

এটা বলবার অপেক্ষা রাখে না যে, শিল্প বিপ্লবের পর থেকে উন্নত দেশসমূহ বায়ুমণ্ডলে যে পরিমাণ কার্বণ নিঃসরণ করছে, অনুন্নত বা উন্নয়নশীল দেশগুলো তা করেনি বা করছে না। কিন্তু এই অনুন্নত বা উন্নয়নশীল দেশগুলো এর ফলাফল ভোগ করছে।

এ বছর নভেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত হবার কথা জলবায়ু সম্মেলন “কপ ২৭”। বিশ্ব নেতাগণ নিশ্চয় জলবায়ু পরিবর্তন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নেবেন। যে সকল দেশ জলবায়ু পরিবর্তনে কম দায়ী তারা যেমন ক্ষতিপূরণ পাবার দাবিদার, তেমনি জলবায়ু পরিবর্তন রোধে বিশ্বব্যাপি শিশু কিশোরদের সচেতন ও প্রস্তুত করতে উদ্যোগ নেওয়া দরকার এখনই।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com