লিঙ্গ বিচারে নয়, ভক্তদের মনে তিনি রয়ে গেছেন একজন মানুষ হিসেবে, একজন শিল্পী হিসেবে।
Published : 30 May 2023, 02:15 PM
জাতীয় পুরস্কার জয়ী কলকাতার চলচ্চিত্র পরিচালক ঋতুপর্ণ ঘোষের প্রয়াণ দিবস মঙ্গলবার। ২০১৩ সালের ৩০ মে মাত্র ৪৯ বছর বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি।
ঋতুপর্ণ শুধু একজন প্রতিভাবান পরিচালকই ছিলেন না, তিনি চিত্রনাট্যকার, গীতিকার এবং অভিনেতা হিসেবেও ছিলেন সফল। সংলাপ রচনার ক্ষেত্রেও প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছিলেন।
গুণী এই পরিচালক মৃত্যুর কয়েক মাস আগে লিঙ্গ পরিবর্তন করে নারীতে রূপান্তরিত হয়েছিলেন। তবে লিঙ্গ বিচারে নয়, ভক্তদের মনে তিনি রয়ে গেছেন একজন মানুষ হিসেবে, একজন শিল্পী হিসেবে।
ঋতুপর্ণ ঘোষ বরাবরই চলচ্চিত্রে তুলে ধরেছেন মানুষের রাখঢাক করার কষ্টগুলো ও লিঙ্গ বৈষম্যের নানা প্রসঙ্গ। এর ফলে অন্তহীন নিন্দা সহ্য করতে হয়েছে তাকে। সামাজিক যৌনতার গোপনীয়তা ভেঙেছেন তিনি। ভেতরকার অবদমনকে বাইরে নিয়ে এসেছেন বেশ সাহসের সঙ্গেই।
পুরুষরা সাধারণত যে ধরনের পোশাক পরেন আগে তিনি সেগুলো পরলেও মৃত্যুর আগে শেষ কয়েক বছর নারীদের প্রচলিত পোশাকই তিনি পরেছেন। এজন্য তাকে নিয়ে অনেকে ঠাট্টা-তামাশা করলেও তিনি নিজের চিন্তাভাবনা থেকে সরে আসেননি। নিজের শর্তেই জীবন কাটিয়েছেন।
ঋতুপর্ণ ঘোষ জন্ম নেন ১৯৬৩ সালের ৩১ অগাস্ট। তিনি পড়াশোনা করেন কলকাতার সাউথ পয়েন্ট হাই স্কুলে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে ডিগ্রি অর্জন করেন। পড়াশোনা শেষে বিজ্ঞাপন এজেন্সিতে এ্যাডভারটাইজমেন্ট কপিরাইটারের কাজ দিয়ে তার ক্যারিয়ার শুরু হয়।
১৯৯২ সালে শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের উপন্যাস অবলম্বনে তার প্রথম চলচ্চিত্র ‘হীরের আংটি’ মুক্তি পায়। তার ১২টি চলচ্চিত্র জাতীয় পুরস্কার পেয়েছে।
এছাড়াও তিনি পেয়েছেন বহু আন্তর্জাতিক সম্মাননা। নব্বইয়ের দশকের গোড়া পর্যন্ত বাংলা ছায়াছবিতে যে বন্ধ্যাত্ব চলছিল, তা কাটিয়ে উঠতে ঋতুপর্ণ ঘোষের অবদান ছিল অসামান্য।
২০১০ সালের বিগ বাংলা মুভি অ্যাওয়ার্ডে দশর্কদের ভোটে ‘সর্বকালের সেরা পরিচালক’ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন ঋতুপর্ণ।
২০১২ সালে ‘চিত্রাঙ্গদা’ সিনেমার জন্য জাতীয় পুরস্কারে ঋতুপর্ণ বিশেষ জুরি অ্যাওয়ার্ড পান। সিনেমাটি মহাভারতের চিত্রাঙ্গদা চরিত্রটিকে নিয়ে নির্মিত হয়েছিলো। পরিচালনার পাশাপাশি এর চিত্রনাট্য রচনা এবং এর কেন্দ্রীয় চরিত্রগুলোর একটিতে অভিনয়ও করেছিলেন তিনি।
প্রতিবেদকের বয়স: ১৫। জেলা: ঢাকা।