পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যু কেন ঘটে, করণীয় কী (ভিডিওসহ)

ইউনিসেফ বলছে, খুব সহজেই পানিতে পড়ে শিশুমৃত্যুর ঘটনা রোধ করা যায়।

জনসংখ্যার অনুপাতে বিশ্বে সবচেয়ে বেশি শিশু পানিতে ডুবে মারা যায় বাংলাদেশে। তাই তো পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যুর খবর প্রায়ই আমরা সংবাদমাধ্যমে দেখতে পাই।

২০২২ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও ইউনিসেফ এক যৌথ বিবৃতিতে জানায়, বাংলাদেশে বছরে ১৪ হাজারেরও বেশি শিশু পানিতে ডুবে মারা যায়। পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের মৃত্যুর দ্বিতীয় প্রধান কারণ এই পানিতে ডুবে মৃত্যু। এটি একটি গুরুতর জনস্বাস্থ্য সমস্যায় পরিণত হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।

২০২১ সালে বাংলাদেশের একটি প্রস্তাব গ্রহণ করে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ পানিতে ডুবে মৃত্যুকে ‘নীরব মহামারি’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয় এবং প্রতি বছর ২৫ জুলাই 'বিশ্ব পানিতে ডোবা প্রতিরোধ দিবস' পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

পানিতে ডুবে এত শিশুর মৃত্যু কেন ঘটে?

শিশুদের পানিতে পড়ে মৃত্যুর অধিকাংশ ঘটনা ঘটে পারিবারিক অসাবধানতার কারণে। বন্যা ছাড়াও দুই ঈদ উৎসবের সময় গ্রামে বেড়াতে গিয়ে পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শহুরে জীবনে অভ্যস্ত অনেক শিশুই সাঁতার জানে না। গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে তাদের অনেকেই দুর্ঘটনার শিকার হয়।

গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটরের (জিএইচএআই) সহযোগিতায় বেসরকারি সংস্থা ‘সমষ্টি’ পানিতে ডুবে মৃত্যু নিয়ে ২০২২ সালে একটি সমীক্ষার ফলাফল তুলে ধরে।

এর আগের দুই বছর ধরে সংগ্রহ করা তথ্য বিশ্লেষণ করে বলা হয়, পানিতে ডুবে মৃত্যুর অধিকাংশ ঘটনা ঘটেছে অগাস্ট মাসে। সকাল থেকে দুপুরের মধ্যে মৃত্যুর ঘটনা বেশি।

ওই সমীক্ষায় আরও বলা হয়, পানিতে ডুবে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি ঘটেছে চট্টগ্রাম বিভাগে। পরের অবস্থানে আছে ঢাকা বিভাগ। সবচেয়ে বেশি মারা গেছে নেত্রকোণা জেলায়। এরপরের অবস্থানে আছে নোয়াখালী ও কুমিল্লা। সবচেয়ে কম মৃত্যু হয়েছে শরীয়তপুরে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও ইউনিসেফ বলছে, বাংলাদেশে যেখানে প্রতিবছর বন্যার কারণে স্থলভূমির বিশাল একটি অংশ তলিয়ে যায়, সেখানে সচেতনতা ও সাঁতারে দক্ষতার অভাব জীবনের জন্য হুমকি হিসেবে দাঁড়াতে পারে। গ্রামীণ এলাকার শিশুরা, যারা জলাশয়ের আশপাশে বেড়ে উঠে, তারাও প্রতিদিন পানিতে ডুবে মারা যাওয়ার ঝুঁকিতে থাকে।

পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যু রোধে করণীয় কী?

ইউনিসেফ বলছে, খুব সহজেই পানিতে পড়ে শিশুমৃত্যুর ঘটনা রোধ করা যায়। পরিবার ও সমাজে সচেতনতা বাড়ানো, শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের সাঁতারে দক্ষ করে তোলা, প্রাক-স্কুল বয়সী শিশুর জন্য শিশুযত্ন কেন্দ্রের সুবিধা নিশ্চিত করা ও জাতীয় নীতিমালা প্রণয়ন ও বিনিয়োগ এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারে।

প্রতিবেদকের বয়স: ১৭। জেলা: কুড়িগ্রাম।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com