বাংলার শ্রেষ্ঠ সন্তান শেখ মুজিবুর রহমান ১৯২০ সালের ১৭ই মার্চ গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন।
তার হৃদয়ে শিশুদের জন্য ভালোবাসা কতটুকু ছিল তা হিসাব করা সম্ভব নয়। বঙ্গবন্ধুর হৃদয় ছিল সাগরের মতো গভীর।
সংগ্রামী জীবনের শত ব্যস্ততার মাঝেও তিনি শিশুদের জন্য ভাবতেন। শিশুদের আনন্দ ও হাসি-খুশিতে রাখার প্রতি গুরুত্ব দিতেন।
রাজনীতির কাজে কিংবা দেশের বিভিন্ন কাজে যখন গ্রামেগঞ্জে যেতেন তখন চলার পথে শিশুদের দেখলে তিনি গাড়ি থামিয়ে তাদের সাথে গল্প করতেন, খোঁজ-খবর নিতেন। দুস্থ ও গরিব শিশুদের দেখলে তাদের কাছে টানতেন। কখনও কখনও নিজের গাড়ীতে উঠিয়ে অফিসে বা নিজের বাড়িতে নিয়ে শিশুকে কাপড়চোপড়সহ অনেক উপহার দিয়ে মুখে হাসি ফোটাতেন। শিশুর বাবা-মায়ের জন্য চাকরি বা কাজের ব্যবস্থা করে দিতেন।
শৈশব থেকেই তার বড় হৃদয় ও ছোট-বড় সবার জন্য দরদি মনের পরিচয় পাওয়া যায়। মানুষের প্রতি দরদি হওয়ার কাররণই মানুষকে তিনি অধিকার আদায়ে উদ্বুদ্ধ করতে, সচেতন করতে, সংগ্রামী করতে পেরেছেন।
১৯৫৮ সালে পাকিস্তানের প্রধান সেনাপতি আইয়ুব খান জোর করেই দেশের ক্ষমতা কুক্ষিগত করে দেশে সামরিক শাসন জারি করেন। শেখ মুজিবসহ বহু নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে জেলে আটকে রাখেন।
পাঁচ বছরের জন্য পুরো দেশে রাজনীতি বন্ধ করে দিলে গ্রেপ্তার হওয়ার পূর্বমুহূর্তে শেখ মুজিবুর রহমান তরুণদের এক যুগান্তকারী নির্দেশ দিয়ে গেলেন। বললেন, “এই পাঁচ বছর তোমরা শিশুসংগঠন কচি-কাঁচার মেলার মাধ্যমে কাজ করো। নিজেদের সচল রাখো।“
শেখ মুজিব জানতেন, কচি-কাঁচার মেলা একটি প্রগতিশীল শিশু সংগঠন। শিক্ষা, সংস্কৃতি চর্চা, খেলাধুলার মাধ্যমে অসাম্প্রদায়িক চেতনা, দেশ ও মানুষকে ভালবাসার মানসিকতায় বিকাশে শিশুরা সেখানে নিজেদের এক একজন সুনাগরিক হিসেবে বেড়ে ওঠার প্রেরণা পাচ্ছে। শিশুরা দেশের যোগ্য নাগরিক হিসেবে নিজেদের গড়ে তোলার সুযোগ পাচ্ছে।
শিশুদের প্রতি এই অপরিসীম ভালবাসা এবং তাদের দিক নির্দেশনা দেওয়ার যে ক্ষমতা তা প্রত্যেকটি শিশুর জীবনেই খুব জরুরি আর তাই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ‘জাতীয় শিশু দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়।