মাসিক নিয়ে কী বলছেন কিশোরীর বাবা-মা

মাসিক নিয়ে কী বলছেন কিশোরীর বাবা-মা

মাসিক নিয়ে নানা কুসংস্কার থাকলেও অনেক মা-বাবাই তার সন্তানের জন্য দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের চেষ্টা করছেন। মায়েদের পাশাপাশি বাবারা এগিয়ে এলে কিশোরীর পথ চলা যেন আরও সহজ হয়।

এমনই কয়েকজন অভিভাবকের সঙ্গে কথা বলে হ্যালো ডট বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।

শারমিন সুলতানা বাগেরহাটে থাকেন। তিনি দুই কন্যা সন্তানের মা। তার মাসিকের অভিজ্ঞতা জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমার পিরিয়ড হওয়ার আগে পরিবার থেকে আমাকে কিছুই বলা বা শেখানো হয়নি। তাই আমার প্রথম পিরিয়ড হওয়ার অভিজ্ঞতা ছিল খুবই খারাপ।”

এখন নিজের মেয়েদের জন্য কী করছেন এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমি আমার মেয়েদের পিরিয়ড হওয়ার বয়সের শুরুতেই তাদের এই বিষয়টা বুঝিয়ে বলি। তাদের মানসিকভাবে প্রস্তুত করি। তাদের বলি যে, এটা খুবই স্বাভাবিক একটা বিষয়।” 

সাবিনা রশীদ বেগম নামে আরেকজন অভিভাবকের সঙ্গে কথা হয়। তিনি এক ছেলে ও এক মেয়ের মা। থাকেন ঠাকুরগাঁওয়ে।

সাবিনা হ্যালোকে বলেন, "আমি পিরিয়ড নিয়ে বেশ সচেতন ছিলাম। আমি মেয়েকে এর ধারণা দিয়েছিলাম সে যখন ক্লাস ফাইভে পড়ে। আমার মনে হয়েছিল এটাই উপযুক্ত সময়। যেহেতু সে রোজ স্কুল যেত তো মনে হয়েছিল যে, ও যাতে হঠাৎ করে ভয় না পেয়ে যায়।”

তিনি আরও বলেন, “আমার সাথে যখন প্রথম এমন হয়েছিল তখন আমি অনেক ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। ভাবছিলাম যে আমি মারা যাব। আমার বড় বোনেরা আমাকে বুঝিয়েছিল। কিন্তু ওর তো কোনো বড় বোন নেই, তাই আমিই তাকে সচেতন করেছি। তাকে শিখিয়েছি কীভাবে এই দিনগুলোয় মন ঠিক রাখতে হয়। পুষ্টিকর খাবার খাওয়া কতটা জরুরী, কীভাবে স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করতে হয়। আর ইদানিং সে আমাকে শেখাচ্ছে আর সচেতন করেছে মেন্সট্রুয়াল কাপের ব্যাপারে।"

হ্যালোর সঙ্গে আরও কথা হয় সালেক খোকন নামে এক বাবার। তিনি একজন লেখক ও গবেষক। রাজধানীর কাফরুলে বসবাস করেন দুই কন্যার জনক।

সালেক খোকন বলছিলেন, “মেয়ের পিরিয়ডের বিষয়টি প্রথম জানি অসুস্থ হিসেবে। তখনই বুঝিয়ে বলি এটা অসুখ নয় মেয়েদের স্বাভাবিক ও প্রাকৃতিক একটি বিষয়। এটা মোটেই কোনো অসুখ নয়। দ্বিতীয়ত ওই সময়টাতে ওদের মেজাজ খুব খিটমিটে হয়। বাবা হিসেবে তাদের তখনকার আচরণগুলোকেও আমরা খুব সিরিয়াসলি নেইনি। বরং কথা বলে বুঝিয়ে তাকে শান্ত রাখার চেষ্টা করি। ”

তিনি যোগ করেন, “পিরিয়ডে পেটে অনেক সময় ব্যাথা হয় তাদের। তখন ওষুধ না খেয়ে কীভাবে সেটা প্রতিকার করা যায় সেগুলো নিয়ে ওদের সঙ্গে কথা বলি। আমার দুই মেয়ের সঙ্গেই পিরিয়ড নিয়ে কথা হয় স্বাভাবিকভাবেই। ফলে পিরিয়ডের সময় ওরা বাবাকে সহজেই ফোন দিয়ে বলতে পারে,  বাবা একটা স্যানেটারি প্যাড নিয়ে এসো। এটি প্রতিটি পরিবারেই হোক।”

Related Stories

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com