মহামারি টেনে এনেছে শিশুশ্রম

মহামারি যতগুলো বিষয়ে উদ্বেগ তৈরি করেছে তার মধ্যে শিশুশ্রমের বিষয়টি বারবারই নানাভাবে সামনে আসছে।
মহামারি টেনে এনেছে শিশুশ্রম

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, চৌদ্দ বছরের ফারজানা এগারো বছর বয়স থেকেই কাজ করত নারায়ণগঞ্জের রুপগঞ্জে হাসেম ফুডস কারখানায়। করোনাভাইরাস মহামারি বিশ্বে ছড়িয়ে পড়লেও তার উপায় ছিল না ঘরে বসে থাকার। 

২০২০ সালের জুলাই মাসে যেদিন এই কারখানায় পুড়ে ছাই হয় অর্ধশতাধিক মানুষ, সেদিন ফারজানাও কাজ করছিল তালা বন্ধ কারখানার ভেতর। পাগলের মতো তার মা খুঁজছিলেন। তবে তাকে পাওয়া গিয়েছিল কিনা তা জানা না গেলেও, কম বেতন দেওয়া যায় বলে সে কারখানায় অনেক শিশু শ্রমিক নিয়োগ দেওয়া হতো বলে খবর বেরিয়ে আসে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ন্যাশনাল চাইল্ড লেবার সার্ভে ২০২১ অনুযায়ী বর্তমানে বাংলাদেশে শিশু শ্রমিকের সংখ্যা ৩৪ লাখ ৫০ হাজার। তার মধ্যে ১২ লাখ ৮০ হাজার শিশু নিয়োজিত রয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ কাজে। আর দুই লাখ ৬০ হাজার শিশু এমন কাজে নিয়োজিত যা তাদের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।

করোনাভাইরাস মহামারি এই সংখ্যাকে আরো বাড়িয়ে দেবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এডিবি থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ২০১৯ সালে বাংলাদেশে দারিদ্রের হার ছিল ২০.৫০ শতাংশ। যা সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) ২০২০ সালের জরিপ অনুযায়ী ৪২ শতাংশ।

ফলে এই দরিদ্র পরিবারের শিশুদেরও অনেকে কাজে যোগ দেবে আর্থিক সচ্ছলতা আনতে। তাছাড়া মহামারির সময় যে শিশুরা স্কুল বন্ধ থাকায় কাজে যোগ দিয়েছিল তাদেরও একটা বড় অংশের স্কুলে ফেরা অনিশ্চিত। এর ফলে শিশুশ্রম বাড়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।  

হ্যালো ডট বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, শিহাব নামের এক শিশু তার ভাইয়ের সাথে ঢাকা এসেছিল ভ্রাম্যমাণ সরিষা তেল বিক্রেতা হিসেবে। ২০২২ সালের পহেলা এপ্রিল তাকে আবারো দেখা যায় কলাবাগান এলাকায়। সে আগের মতোই তেল বিক্রি করছে। এখনো তার স্কুলে ফেরা হয়নি। 

আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) ও ইউনিসেফের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, লাখ লাখ শিশুকে শ্রমের দিকে ঠেলে দেওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে, যা গত ২০ বছরের অগ্রগতির পর প্রথম শিশুশ্রম বাড়িয়ে দিতে পারে।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com