মঙ্গলের বারতা নিয়ে মঙ্গল শোভাযাত্রা

বাঙালির নববর্ষ উদযাপনের ইতিহাসটা অনেক পুরোনো।
মঙ্গলের বারতা নিয়ে মঙ্গল শোভাযাত্রা

কালের প্রবাহে বাংলা পঞ্জিকার প্রথম দিনটি বরণ করার আনুষ্ঠানিকতায় এসেছে নানান বৈচিত্র্য। এর মধ্যে ১৩৯৬ বঙ্গাব্দের বর্ষবরণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ যুক্ত করে একটি নতুন আয়োজন। সে বছর বৈশাখের সকালে প্রথমবারের মতো বের করা হয় মঙ্গল শোভাযাত্রা।

পরবর্তী তিন দশকে মঙ্গল শোভাযাত্রা পহেলা বৈশাখের অন্যতম প্রধান অনুষঙ্গ হয়ে উঠেছে।

সমাজের সম্প্রীতি, শিল্প-সংস্কৃতি ও বাঙালি জাতিসত্ত্বার এক অনন্য পরিচয় ফুটিয়ে তোলা হয় এই মঙ্গল শোভাযাত্রার মাধ্যমে। বাঘ, ঘোড়া, পেঁচা, দোয়েল, পাপেট, রাজা-রানীসহ আরো অনেক কিছুর প্রতিকৃতি, মুখোশ ও ফেস্টুন মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রধান আকর্ষণ।

লোকশিল্পের বিভিন্ন উপাদানের তৈরি এই প্রতীকগুলো শান্তি ও মঙ্গলের বার্তা বহন করে। সকলের রঙিন পোশাক, পথের আলপনা ও দেয়ালের কারুকার্য এ উৎসবকে আরো প্রানবন্ত করে তোলে। তাই এই মঙ্গল শোভাযাত্রা যে ছোটবেলার একটি মজার স্মৃতি হয়ে থাকবে সে বিষয়ে সন্দেহ নেই।

প্রতি বছর নির্দিষ্ট বিষয়বস্তুর উপর নির্ভর করে সাজিয়ে তোলা হয় মঙ্গল শোভাযাত্রাকে। দুই থেকে তিন সপ্তাহ আগে থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা শোভাযাত্রাকে সূক্ষ্ম কারুকার্যের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।

এ বছর ‘নির্মল কর, মঙ্গল করে মলিন মর্ম মুছায়ে’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বরণ করে নেয়া হয় নতুন বছরকে। গত কয়েক বছর ধরে জেলা ও উপজেলা পর্যায়েও মঙ্গল শোভাযাত্রা আয়োজিত হচ্ছে। 

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রতিবেদন অনুযায়ী বর্ষবরণের এই আয়োজন এখন আর শুধু বাংলাদেশের ঐতিহ্য নয়। এটি ২০১৬ সালে জাতিসংঘ সংস্থা ইউনেস্কোর সাংস্কৃতিক ঐতিহ‌্যের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে।

ইউনেস্কো কমিটি বলেছে, এই মঙ্গল শোভাযাত্রা বাংলাদেশের মানুষের সাহস আর অশুভের বিরুদ্ধে গর্বিত লড়াই আর ন‌্যায় ও সত‌্য প্রতিষ্ঠার আকাঙ্ক্ষার প্রতীকী রূপ।

বাংলা সংস্কৃতির তুলনামূলক নব এই সংযোজন সমাদৃত হয়েছে বিশ্ববাসীর কাছে। মঙ্গল শোভাযাত্রাকে ঘিরে বেঁচে থাকবে বাংলার লোকশিল্প এবং বেঁচে থাকবে অন্যায় ও অপসংস্কৃতির বিরুদ্ধে পরবর্তী প্রজন্মের প্রতিবাদী চেতনা এমনটাই আশা সবার।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com