আমাদের নববর্ষ, আমাদের উৎসব

বাংলা নববর্ষের প্রথম দিনটিই হলো পহেলা বৈশাখ। পৃথিবীর প্রায় সব জাতি নিজ নিজ বছরের প্রথম দিনটিকে বরণ করতে নানা আয়োজন করে।
আমাদের নববর্ষ, আমাদের উৎসব

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ১৫৫৬ সাল থেকে বাংলা সনের প্রচলন শুরু হয়, যার প্রবক্তা ছিলেন মোঘল সম্রাট জালাল উদ্দিন মোহাম্মদ আকবর।

বাদশাহ আকবর খাজনা আদায়ের সুবিধার্থে  ১৫৮৪ খ্রিস্টাব্দের ১০ বা ১১ মার্চ থেকে 'তারিখ-এ-এলাহি' নামে নতুন বছর গণনা চালু করেন। সে সময়ের কৃষকদের কাছে এটি 'ফসলী সন' নামে পরিচিত হয়, যা পরে 'বাংলা সন' বা 'বঙ্গাব্দ' হয়ে ওঠে।

নতুন এই সাল আকবরের রাজত্বের ২৯তম বর্ষে চালু হলেও তা গণনা আরম্ভ হয় ১৫৫৬ খ্রিস্টাব্দের ৫ নভেম্বর থেকেই। বাংলা সনের প্রথম বছর ছিল ৯৬৩ হিজরী। এর আগে কোনো বাংলা সন নেই।

বছরের শুষ্ক মৌসুমের প্রথম দিনটিতে অর্থাৎ পহেলা বৈশাখের দিনে জমিদাররা খাজনা আদায় করত। জমিদারদের সেই আয়োজনের নাম ছিল 'পুণ্যাহ'। 
আজকাল জমিদার ও নেই, 'পুণ্যাহ' প্রথাও নেই। তবে ব্যবসা-বাণিজ্যের এক বছরের লেনদেনের, লাভ ক্ষতির হিসাব মিটিয়ে বছর নতুন দিনে হালখাতা খোলার রীতি এখন নববর্ষ উদযাপনের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত।

সম্রাট আকবর বাংলা সন প্রবর্তন এর পর থেকেই 'হালখাতা'র প্রচলন হয় তৎকালীন ভারতবর্ষে। পুরনো বছরের হিসাব বন্ধ করে নতুন হিসাব খোলা হয় খাতায়, তাই হল 'হালখাতা'।

'হালখাতা' আবহমান বাংলার চিরায়ত  সংস্কৃতি। বর্তমান সময়ে বাংলা সনের প্রথম দিনে দোকানের হিসাবের এই আনুষ্ঠানিক হালনাগাদের প্রক্রিয়ায় ভাটা পড়েছে। তবে শহরে কিংবা গ্রামে এখনো ছোট পরিসরে পালন করেন কিছু ব্যবসায়ী। ক্রেতাদের আপ্যায়নের মাধ্যমে তারা খাতা হালনাগাদ করে বকেয়া আদায়ের এই প্রথাটি ধরে রেখেছেন।

বাংলা নববর্ষ উদযাপন আমাদের ঐতিহ্য। এ দিনটি উদযাপনের মাধ্যমে আমরা আমাদের সেই প্রাচীনতম ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে বয়ে চলি। নতুনকে গ্রহণ করার পুরাতনকে মুছে ফেলার ও সম্মুখপানে এগিয়ে যাওয়ার শিক্ষাও আমরা গ্রহণ করি নববর্ষ উদযাপনের মাধ্যমে। তাই এদিন এতো আনন্দের, এত গুরুত্বের।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com