পানির অপর নাম জীবন হলেও, মনে করা হচ্ছে জীবন ধারণের জন্য যতটুকু পানি প্রয়োজন, তা দিন দিন নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। পানির চাহিদা মেটাতে ভূ-গর্ভস্থ পানি উত্তোলন বাড়ছে, যার ফলে নেমে যাচ্ছে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর। জীবন রক্ষাকারী পানি হয়ে উঠছে মৃত্যুর কারণ।
বিবিসির এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বাংলাদেশে মাটির নিচে পানির স্তর ক্রমশই আরো নিচের দিকে নেমে যাচ্ছে। সরকারি হিসেব মতেই সারা দেশের নানা জায়গায় পানির স্তর চার থেকে ১০ মিটার পর্যন্ত কমে গেছে।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের এক প্রতিবেদন বলছে, চট্টগ্রামের শিল্প-কারখানা অধ্যুষিত মীরসরাই ও সীতাকুণ্ড এলাকায় ভূগর্ভস্থ পানির স্তর গত কয়েক বছরে এতটাই নিচে নেমে গেছে যে অগভীর নলকূপে আর পানি মিলছে না।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম সার্কেলের নির্বাহী প্রকৌশলী সুমন রায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সীতাকুণ্ড, মীরসরাইসহ কয়েকটি উপজেলায় পাঁচ বছর আগেও ১৫-২০ ফুট গভীরতায় সুপেয় পানির স্তর পাওয়া যেত। এখন কমপক্ষে ৩০ ফুট নিচে যেতে হয়।
ভূগর্ভের পানির বিকল্প হিসেবে বৃষ্টির পানির ব্যবহার বাড়ানোর পরামর্শ দেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) ওয়াটার রিসোর্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. আয়েশা আক্তার।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “দূষণ ও লবণাক্ততা কমাতে কৃত্রিম উপায়ে ভূগর্ভে পানি পাঠানো যেতে পারে। গৃহস্থালীর কাজে, গাড়ি পরিষ্কার এবং টয়লেট ফ্লাশে বৃষ্টির পানি ব্যবহার করা যেতে পারে।”
জাতিসংঘ বলছে, ভূগর্ভস্থ পানি ছাড়া জীবন সম্ভব হবে না। পৃথিবীর অধিকাংশ শুষ্ক এলাকা সম্পূর্ণরূপে ভূগর্ভস্থ পানির উপর নির্ভরশীল। আমাদের অবশ্যই তাদের অত্যধিক শোষণ থেকে রক্ষা করতে হবে।
পানিসম্পদের সর্বাধিক গুরুত্বের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৯৩ সাল থেকে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে সারাবিশ্বে ২২ মার্চ বিশ্ব পানি দিবস পালন করা হয়ে আসছে। এর এক বছর আগে ১৯৯২ সালে ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরোতে জাতিসংঘের পরিবেশ ও উন্নয়ন সম্মেলনে এ দিবস পালনের প্রস্তাব দেওয়া হয়।