শিশুদের প্রতি তার ভালোবাসা, দায়িত্ববোধ, মমতার কথা সবাই জানে।
তিনি চেয়েছিলেন, প্রতিটি শিশুই বেড়ে উঠুক তার সমস্ত অধিকার নিয়ে, শিক্ষায়, আনন্দে। আর তাই তার জন্মদিনটিই আমাদের শিশু দিবস। কিন্তু স্বাধীনতার ৫০ বছর পর এ দেশের শিশুরা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের কতটুকু কাছাকাছি?
এ বিষয়ে হ্যালো মুখোমুখি হয় বেশ কয়েকজন শিশুর।
তাসফিয়া (১৩) এক স্বচ্ছল পরিবারের মেয়ে। পড়াশোনা করে একটি ইংরেজী মাধ্যম স্কুলে। পরিবারের আদর যত্নে সে বড় হচ্ছে। মৌলিক অধিকারের সবগুলোই তার হাতের কাছে। বড় হয়ে সে আর্কিটেক্ট হতে চায়।
দিয়ানা এক চাকুরীজীবি দম্পত্তির সন্তান। পড়াশোনা করছে একটি বেসরকারি স্কুলে। চিকিৎসক হবার স্বপ্ন নিয়ে সেও বড় হচ্ছে স্বাভাবিক নিয়মেই।
প্রিয়তা দিয়া পড়াশোনা করে একটি সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণিতে। বাবা একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। শত অভাব অনটনের মধ্যেও সে পড়াশোনা করছে। তার প্রত্যাশা সকল শিশুরা যেন তাদের অধিকার পায়।
কিন্তু দিন মজুরের মেয়ে মারিয়া? তার কাছে শিশু অধিকার সোনার হরিণের মত। ১১ বছর বয়সেই নিজ কাঁধে তুলে নিয়েছে সংসারের ভার।
কিশোরগঞ্জ থেকে একই এলাকার অন্যদের সাথে এসেছে ঢাকায়। গৃহকর্মী মায়ের সাথে থাকে আদাবর। ধানমণ্ডি এলাকায় বেলুন বিক্রি করে। শিশু দিবস কী, কখন, কেন এসব জানার চেয়ে একটি বেলুন বিক্রি করাই তার কাছে জরুরী।
ভ্রাম্যমাণ ফেরিওয়ালার মেয়ে মরিয়ম। তার বাবা চা, সিগারেট ফেরি করে বিক্রি করেন। মা কাজ করেন অন্যের বাসা বাড়িতে। আর সে বেলুন, চকলেট, মাস্ক নানান কিছু বিক্রি করতে ঘুরে বেড়ায় রাস্তায় রাস্তায়। সে পড়াশোনা করতে চায়। কিন্তু রাস্তায়ই কাটে তার দিন। পড়বে কখন?
আন্তর্জাতিক শিশু অধিকার সনদে বাংলাদেশ স্বাক্ষর করেছে ১৯৯০ সালে। সে অনুযায়ী মারিয়া, মরিয়মদের মত দেশের অনেক শিশু বঞ্চিত রয়েছে তাদের প্রাপ্য অধিকার থেকে। শিশু দিবসের চকচকে অনুষ্ঠানের আড়ালে আমরা যেন ভুলে না যাই সেসব শিশুদের অধিকারের কথা, তাদের নিয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের স্বপ্নের কথা।