কোনো এক বন্যায় বরিশাল থেকে ঢাকা চলে এসেছিলেন জহুরা খাতুন। সেই যে ঘর ভেঙেছে, আর ঘর হয়নি তার। রোদ, বৃষ্টি, বাদল যাই হোক না কেন খোলা আকাশের নিচেই তার বাস। সাথে আছে দুই বছর বয়সী শিশু মুসা।
কখনো ভিক্ষা করেন, কখনো ছোটখাট কাজ করে দিন যায় তার। কিন্তু কাজ বা ভিক্ষা যাই করুক না কেন ছোট মুসাকে দেখার কেউ নেই। খেলতে খেলতে সে এদিক ওদিক চলে যায়।
রাজধানীর পান্থপথে জহুরার সাথে কথা হয় হ্যালোর। তিনি জানান, একবার রাস্তার পাশে খেলতে থাকা শিশু মুসাকে এক বাইক চালক ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে যায়। হাতে সেলাই লাগে অনেকগুলো। অর্থাভাবে সে চিকিৎসাও সঠিকভাবে করতে পারছেন না। তাই এখন শিশু মুসাকে বেঁধে রাখেন তিনি। মুসার আর খেলা হয় না।
অথচ আন্তর্জাতিক শিশু সনদের অনুচ্ছেদ ৩১ এর ১ এ অন্যান্য অধিকারের সাথে শিশুর খেলার অধিকারেরও স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে।
হ্যালোর ক্যামেরায় ঢাকার কাকরাইলে ধরা পড়ে এমনি অধিকার বঞ্চিত আরেক শিশু শিরিন। তারও কোমরে দড়ি বাঁধা। কারণ তার মা দৃষ্টি প্রতিবন্দী। স্বামী চলে যাবার পর ছোট্ট শিরিনকে নিয়ে ভিক্ষাই যেন তার বাঁচার একমাত্র পথ। ফলে শিরিনকে হারানোর ভয়ে তার কোমরে দড়ি পরিয়েছেন।
কাউকে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা নিশ্চয়ই মানবিক কাজ নয়। শিশুর বেলাতে তো আরও নয়। কিন্ত এ মায়েরা যেন নিরুপায়। তাহলে, এই শিশুদের অধিকার কবে নিশ্চিত হবে? কবে দড়ির বাঁধনে আটকে থাকবে না কোনো শিশুর শৈশব।