সৈয়দ নজরুল ইসলাম ও বাংলাদেশ (ভিডিওসহ)

অনেক ত্যাগ-তিতিক্ষা আর রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম। কিন্তু যাদের শ্রমে, ঘামে, ত্যাগে আর রক্তদানে আমরা পেয়েছি স্বাধীনতা; তাদের অনেকের কথা কতটুকু জানে আজকের শিশু, কিশোর কিংবা তরুণরা?
সৈয়দ নজরুল ইসলাম ও বাংলাদেশ (ভিডিওসহ)

বাংলাদেশের ইতিহাসে যাদের নাম অনন্তকাল শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করতে হবে তাদের মধ্যে বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য হচ্ছেন সৈয়দ নজরুল ইসলাম। তিনি বিখ্যাত চার নেতার একজন।

তিনি মুজিবনগর সরকারের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি ছিলেন। যুদ্ধের সময় বঙ্গবন্ধু যখন কারাগারে অন্তরীণ, তখন তার স্বপ্ন বাস্তবায়নে মুক্তিযুদ্ধকে সফল করেছেন যারা সৈয়দ নজরুল ইসলাম তাদের মধ্যে অন্যতম। স্বাধীন দেশেও তিনি জীবন দিয়েছেন, কিন্তু মাথা নত করেননি।

কিশোরগঞ্জ জেলার যশদল ইউনিয়নের বীরদাম পাড়ায় ১৯২৫ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি তিনি জন্ম গ্রহণ করেন। সৈয়দ নজরুল ইসলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন।

ছাত্রজীবন থেকেই তিনি রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন। ১৯৪৬-১৯৪৭ সলে তিনি ছিলেন সলিমুল্লাহ্ মুসলিম হল ইউনিয়নের সহ-সভাপতি।

পরবর্তীতে তাকে মুসলিম ছাত্রলীগের সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত করা হয়। ভাষা আন্দোলনে সর্বদলীয় অ্যাকশন কমিটির সদস্য হিসেবে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন বলে বাংলাপিডিয়ায় দেওয়া তথ্য থেকে জানা যায়।

তৎকালীন পাকিস্তানের আইয়ুব সরকার যখন জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করেন, তখন দলের কাণ্ডারি হয়ে আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

তিনি যা করেছেন, দেশের জন্য করেছেন, নিজের জন্য কিছু করেননি। তাছাড়া মানুষ হিসেবেও তিনি ছিলেন অসাধারণ।

সৈয়দ নজরুল ইসলামকে নিয়ে আরো বিশদভাবে জানতে হ্যালো গিয়েছিল তার গ্রামে।

সেখানে মসজিদের এক ইমামের সঙ্গে কথা হয়। তার নাম মোহাম্মদ মাহ্তাবউদ্দীন। তিনি ব্যক্তিগত ভাবে সৈয়দ নজরুল ইসলামকে দেখেছেন। তিনি জানান, সৈয়দ নজরুল ইসলাম নিজের কথা কখনোও ভাবতেন না।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম সম্পর্কে কথা হয় তার গ্রামের আরেক বাসিন্দা সৈয়দ আহাদুর রহমানের সঙ্গে। তিনি জানান, সৈয়দ নজরুল তার গ্রামের অসংখ্য মানুষকে নামেই চিনতেন। গ্রামের মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য তিনি টেক্সটাইল মিলসহ আরও নানান পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। গ্রামে এসে তিনি প্রত্যেক মানুষের কথা আলাদা আলাদাভাবে শুনে তৎক্ষনাৎ তাদের সমস্যা সমাধানের ব্যবস্থা গ্রহণ করতেন।

সৈয়দ নজরুল ইসলামের মত দেশপ্রেমিক, ভালোউ মানুষ আবার কবে পাবে বাংলাদেশ সে সম্পর্কে অশঙ্কা প্রকাশ করেন তাকে খুব কাছ থেকে দেখা আহাদুর রহমান।

১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বরের গভীর রাতে ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে আরও তিনজন জাতীয় নেতার সাথে সৈয়দ নজরুল ইসলামকেও নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। তাকে সমাহিত করা হয় ঢাকার বনানী গোরস্থানে।

তার স্মৃতি রক্ষায় নির্মিত বেশ কিছু উদ্যোগ ধরা পরে হ্যালোর ক্যামারায়। তাছাড়া ময়মনসিংহ শহরে তার নামে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে একটি কলেজ। তার নামে রয়েছে একটি সড়কও। সেখানে তার ছবিসহ নাম ফলক রয়েছে। তবে সেটি নানান ব্যানার আর ফেস্টুনে ঢেকে গেছে।

কিশোরগঞ্জ সদরে তৎকালীন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের প্রচেষ্টায় তার নামে স্থাপিত হয়েছে একটি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল। ঢাকাতেও তার নামে একটি সড়কের নামকরণ করা হয়েছে।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com