তার জীবনের এক চতুর্থাংশ সময়ই কেটেছে কারাপ্রকোষ্ঠে। বাঙালি জাতির ওপর অত্যাচার, নির্যাতনের প্রতিবাদী এই কণ্ঠস্বরকে তবুও কোনোভাবে বন্ধ করা যায়নি।
ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গের মানুষকে সমান মর্যাদা ও অধিকার দিয়ে তিনি সোনার বাংলা সাজাতে চেয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের কথা বলেছেন বারবার। দ্বিজাতিতত্ত্ব নামে সাম্প্রদায়িক যে তত্বের মাধ্যমে দেশ ভাগ হয় তাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে দেয় ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ। তার বাবার নাম শেখ লুৎফর রহমান ও মা সায়েরা খাতুন। তাদের চার কন্যা ও দুই পুত্রের মধ্যে শেখ মুজিবুর রহমান তৃতীয়।
১৯২৭ সালে শুরু হয় তার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা জীবন। সাত বছর বয়সে ভর্তি হন গিমাডাঙ্গা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। নয় বছর বয়সে তিনি গোপালগঞ্জ পাবলিক স্কুলে ভর্তি হন। এরপর তার জীবনে ছন্দপতন হয়। শারীরিক অসুস্থতার জন্য চার বছর তার লেখাপড়া বন্ধ থাকে।
চোখে জটিল রোগের কারণে তাকে অপারেশন করাতে হয়। এ থেকে সম্পূর্ণ সেরে উঠতে বেশ সময় লেগে যায়। পরে ১৯৩৭ সালে গোপালগঞ্জে মাথুরানাথ ইনস্টিটিউট মিশন স্কুলে ভর্তি হন। ১৯৪২ সালে গোপালগঞ্জ মিশনারি স্কুল থেকে তিনি ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করেন।
তার রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় ১৯৩৯ সালে মিশনারি স্কুলে পড়ার সময় থেকেই। ১৯৪২ সালে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করে কলকাতা ইসলামিয়া কলেজে (বর্তমানে মৌলানা আজাদ কলেজ) ভর্তি হন শেখ মুজিব। তার রাজনৈতিক তৎপরতা বাড়তে থাকে। কলেজ ছাত্র সংসদের জিএস নির্বাচিত হন ১৯৪৬ সালে। ১৯৪৭ সালে এই কলেজ থেকেই তিনি স্নাতক ডিগ্রি নেন। অন্যায়ের বিপক্ষে নানা আন্দোলন, প্রতিবাদে সামিল হন। এক সময় তিনি হয়ে উঠেন স্বাধীনতাকামী মানুষের দিশারী।
বাঙালি জাতির পক্ষে নানা আন্দোলনে নিবেদিত প্রাণ ছিলেন এই মানুষটি। অন্যায় দেখলে তিনি তা রুখে দিতে চেয়েছেন। রাজপথের সংগ্রামে তিনি ছিলেন অগ্রপথিক। স্বাধীনতাকামী বাঙালিকে উপহার দিয়েছেন স্বাধীনতা। ১৯৬৯ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি তিনি ভূষিত হন ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিতে।