এমতাবস্থায় আমাদের পড়াশোনা যে খুব ভালো চলছে তা কিন্তু নয়। প্রচুর সময় পাচ্ছি ঠিকই কিন্তু পড়াশোনাটা হচ্ছে না। মানসিক স্বাস্থ্যের অবস্থাটাও ভালো নেই।
শহরাঞ্চলের শিশুরা অনলাইন ক্লাসে অংশ নিতে পারলেও গ্রামের চিত্র একদমই ভিন্ন। দেড় বছরেও তারা কোনো অনলাইন ক্লাস পায়নি। টেলিভিশনে ক্লাস করালেও সেটাতেও তাদের আগ্রহ নেই। শিক্ষকের নজরদারি ছাড়া কয়জনই বা পড়তে চায়! শিশুমন তো পড়া ফাঁকি দিতে চাইবেই।
অনেক নিম্নআয়ের পরিবারের অভিভাবকরা সন্তানকে কাজে দিয়ে দিচ্ছেন, মেয়েদের বাল্যবিয়ে করতে বাধ্য করছেন।
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের জেন্ডার জাস্টিস অ্যান্ড ডাইভারসিটি বিভাগের এক জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ১৩ শতাংশ করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে তাদের এলাকায় বাল্যবিয়ে হয়েছে বলে জানিয়েছেন। সংস্থাটির ১১টি জেলার ৫৫৭ জন সাক্ষাৎকারদাতার ৭২ জন এই সময়ে ৭৩টি বাল্যবিয়ের ঘটনা দেখেছেন।
এসব বাল্যবিয়ের ৮৫ শতাংশই হয়েছে সঙ্কটকালে মেয়েদের ভবিষ্যৎ নিয়ে অভিভাবকদের উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণে। ৭১ শতাংশ বিয়ে হয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায়।
করোনাভাইরাস সঙ্কটে বিদেশ থেকে ফেরত আসা পাত্র পাওয়ায় ৬২ শতাংশ শিশুর পরিবার বিয়ে দিতে আগ্রহী হয়েছে। ৬১ শতাংশে বিয়ে হয়েছে অভিভাবকের সীমিত উপার্জনের কারণে পরিবার চালানোয় হিমশিম খাওয়ায়।
মেয়েরা যখন বাল্যবিয়ের শিকার হচ্ছে, ছেলেদের তখন কাজে পাঠাচ্ছে বাবা-মা। যারা বাড়িতে স্কুল খোলার অপেক্ষায় রয়েছে, তাদের অনেকে আবার নানা ধরনের মোবাইল গেইমে আসক্ত হয়ে যাচ্ছে। মানসিক স্বাস্থ্যকে নষ্ট করে দিতে এগুলো যথেষ্ট।
আগে শিশু কিশোররা মাঠে খেলাধুলা করত। ক্রিকেট, ফুটবল, হা-ডু-ডু এছাড়া নানা রকমের খেলার প্রচলন রয়েছে। কিন্তু আমাদের ভালো লাগা ওই মোবাইল ফোনের গেইমেই। নির্দিষ্ট মাত্রায় খেললে হয়ত সমস্যা ছিল না, কিন্তু আমার মনে হয় এটি মাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। আমার আশে পাশের চিত্র তা ই বলে। সবে স্কুলে পড়ে তারাও খেলছে অনেক সহিংস গেইম।
আমাদের প্রজন্মকে বাঁচাতে সরকারকে অবশ্যই দায়িত্ব নিতে হবে। শিক্ষার্থীদের বিষয়ে আরও ভাবতে হবে। যে প্রজন্ম আগামীর বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করবে তাদের জন্য বিশেষ নজর দিতে হবেই।