আমাদের সত্যজিৎ

যে ক’জন বাঙালি তার শিল্প-সংস্কৃতিকে পৃথিবীর মানুষের কাছে সম্মানের সাথে তুলে ধরেছেন সত্যজিৎ রায় তাদের মধ্যে অন্যতম। বহুমূখী প্রতিভার অধিকারী এই বাঙালি ১৯২১ সালের ২ মে কলকাতা শহরের বিখ্যাত রায় পরিবারে জন্ম নেন।
আমাদের সত্যজিৎ

আজ তার জন্মশত বার্ষিকী। তার পৈতৃক নিবাস ছিল বাংলাদেশের বৃহত্তর ময়মনসিংহের কিশোরগঞ্জ জেলার মসূয়া গ্রামে। তার বাবা ছিলেন সুকুমার রায়, মা সুপ্রভা রায়।

তিনি বিখ্যাত লেখক উপেন্দ্রকিশোর রায় চৌধুরীর নাতি। স্কুল জীবনেই তার চলচ্চিত্র আর পাশ্চাত্য ধ্রুপদী সংগীতের প্রতি আগ্রহ জন্মায়। কলেজ জীবনে তিনি চলচ্চিত্র পরিচালনায় আগ্রহী হয়ে উঠেন।

১৯৪৭ সালে তিনি ও তার কয়েকজন বন্ধু মিলে প্রতিষ্ঠা করেন কলকাতা চলচ্চিত্র সংসদ। পরবর্তীতে তিনি চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য গঠন করেন ‘কনক পিকচার্স।’

চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসাবে সত্যজিৎ রায় পেয়েছেন আন্তর্তজাতিক স্বীকৃতি পেলেও তিনি ছিলেন চিত্রনাট্যকার, গীতিকার, ম্যাগাজিন সম্পাদক, চিত্রকার, ক্যালিগ্রাফার এবং সুরকার।

তিনি শিশু কিশোরদের জন্য বেশ কয়েকটি ছোটগল্প এবং উপন্যাস রচনা করেন। তার সৃষ্টি ফেলুদা, প্রফেসর শঙ্কু গোয়েন্দা গল্পে অবিস্মরণীয় কাল্পনিক চরিত্র।

তিনি তার প্রথম ছবি পথের পাঁচালীর সম্পূর্ণ অচেনা লোকেশন, নতুন কলাকুশলী এবং কোনো মেকাপ ছাড়াই নির্মাণের পরিকল্পনা করলে সবাই তাকে নিরুৎসাহিত করে। কিন্তু ১৯৫০ সালে লন্ডনে অবস্থানকালে ইতালির ভিত্তোরিও ডি সিকা পরিচালিত “দ্য বাইসাইকেল থিফ” ছবিটি দেখে তিনি মুগ্ধ হন এবং নির্মাণ করেন পথের পাঁচালী।

সত্যজিৎ রায় তার দীর্ঘ কর্মজীবনে প্রচুর পুরস্কার অর্জন করেছেন। তারমধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো মৃত্যুর কিছুদিন আগে পাওয়া অস্কার পুরস্কার।

তার প্রথম চলচ্চিত্র পথের পাঁচালী নির্মাণের জন্য তিনি ১১টি আন্তর্জাতিক পুরস্কার লাভ করেন। এমনকি তিনিই দ্বিতীয় চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব যাকে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করে। নিজ দেশেও দাদা সাহেব ফালকে পুরস্কার, ভারতরত্নসহ অসংখ্য পুরস্কার পান।

এই প্রতিভাবান বাঙালি ১৯৯২ সালের ২৩ এপ্রিল কলকাতায় পরলোক গমন করেন।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com