৮৩ বয়সী এই ছড়াকারের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হয় প্রতিবেদকের।
এখন শরীরের অবস্থা কেমন আছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, "বলব না যে খারাপ আছি। ভালোই আছি আমি। তবে বার্ধক্যের কারণে ডায়াবেটিস আর কিডনির একটু সমস্যা রয়েছে। এছাড়া প্যারালাইসিসের জন্য যদিও একটু চলাচলে কষ্ট হয়।"
মহামারি করোনাভাইরাস আসার পর 'নতুন স্বাভাবিক' জীবন ধারণের চেষ্টা করছে সবাই। বন্দি জীবনও মেনে নিতে হচ্ছে। সুকুমার বড়ুয়ার জীবনে কী পরিবর্তন এসেছে, হ্যালোর তরফ থেকে এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, "আসলে আমি মহামারির পূর্ব থেকেই ঘরবন্দি ছিলাম। স্ট্রোকের কারণে আমার পা প্যারালাইসড হয়ে যায়।"
পরিবর্তন বলতে শুধু পরিবারের সবাইকে মিস করেন, কারণ মহামারির কারণে আত্মীয়-স্বজন, কাছের মানুষদের নিয়ে জমায়েতটা এখন হয়ে ওঠে না বলে তিনি জানান।
বাড়িতে সময় কাটে কী কী করে জানতে চাইলে তিনি হ্যালোকে বলেন, "সত্যি বলতে সারাদিন যে কী করতে করতে কাটে আমারও জানা নেই। পরিবারের সাথে সময় কাটাই, পত্রিকা পড়ি, ইচ্ছে করলে টেলিভিশন দেখি। এছাড়া তেমন কিছু করা আসলে সম্ভব হয়ে ওঠে না।"
সংক্রামক করোনাভাইরাস থেকে নিরাপদ থাকার প্রসঙ্গটি সামনে আসলে তিনি যোগ করেন, "এই তো ঘরবন্দি হবার একটা ভালো দিকই আসলে এটা। নিজের এবং আশেপাশের সকলের জন্য সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে পারছি।"
এই আলাপচারিতায় লেখালেখির প্রসঙ্গটিও টানা হয়। লেখালেখি কি বন্ধ হয়ে হয়ে গেছে এই প্রশ্নের জবাবে তার উত্তর ছিল, "ছন্দ কাটা তো দৈনিকের কাহিনী। তবে লেখালেখি আসলে বিশ বছর আগেই ছুটে গেছে। এখন কেবল আবেদনের লেখালেখি করা হয়। আমার ছেলে অরুপ রতন বড়ুয়া সাধারণত আমার বই প্রকাশনার বিষয়টি দেখে। কিন্তু মহামারির কারণে বর্তমানে তাও কষ্টকর হয়ে পড়েছে। নতুন বই যদি প্রকাশিত হয় তবে তা সুদূর ভবিষ্যতে হতে পারে।"
আলাপচারিতার শেষ পর্যায়ে তিনি অতিমারির এই অস্থির সময়ে শিশুদের মনোবল শক্ত রাখার পরামর্শ দেন।
সুকুমার বড়ুয়া বলেন, "আমার শৈশব কেটেছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী দুর্ভিক্ষ দেখে যখন আমি পিতৃহারা হই। সেই কষ্টকর সময়ে আমি নিজের মনোবল ধরে রেখে নিজের মনকে জাগ্রত রেখেছি। এরকম বিপদাচ্ছন্ন সময়ে মনোবল শক্ত রাখতে হয়। নিজের অভ্যন্তরীণ যেই অসীম সম্ভাবনার মন রয়েছে তা আগলে ধরে রাখলেই ভালো থাকা যায়।"