বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে কেন শিশু দিবস

১৯৭২ সালে শিশু আইন তৈরি করেন বঙ্গবন্ধু। তিনি বিশ্বাস করতেন শিশুরাই দেশের ভবিষ্যৎ, তারাই একদিন সোনার বাংলা গড়তে পারবে।
বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে কেন শিশু দিবস

শিশুদের প্রতি অপরিসীম ভালোবাসার জন্য বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনকে জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে পালন করা হয়।

১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা প্রথমবার ক্ষমতায় এসে দিবসটি পালনের ঘোষণা দেন। পরের বছর থেকে শুরু হয় শিশু দিবস পালন। ক্ষমতা বদল হলে দিবসটি পালনের রাষ্ট্রীয় আনুষ্ঠানিকতা বন্ধ হয়ে যায়। তবে বেসরকারি ও দলীয় পর্যায়ে পালন করা হতো দিনটি। ২০০৯ সালে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিলে আবারও শুরু হয় রাষ্ট্রীয়ভাবে জাতীয় শিশু দিবস পালন।

বঙ্গবন্ধুর সহযোদ্ধা, নিকটজন ও বিভিন্ন লেখকের ভাষ্যে বিভিন্ন গণমাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর শিশুপ্রীতির কথা জানা যায়। স্বাধীন বাংলাদেশে তিনি যখন সবার বঙ্গবন্ধু হয়ে উঠেছেন, তখনও তিনি শিশুদের সঙ্গে সময় কাটাতে পছন্দ করতেন। শিশুদের কোনো সমাবেশে গেলে বা শিশুরা গণভবনে তার কাছে গেলে, তিনি শিশুর মতো তাদের সঙ্গে মিশে যেতেন।

১৯৬৩ সালে শেখ মুজিবুর রহমান তখনো বঙ্গবন্ধু কিংবা জাতির পিতা উপাধি পাননি। জাতীয় প্রেসক্লাব চত্বরে সেই সময় কচিকাঁচার মেলা আয়োজিত শিশু আনন্দমেলায় এসেছিলেন তিনি। সেখানে বলেছিলেন এই পবিত্র শিশুদের সঙ্গে তিনি মেশেন মনটাকে একটু হালকা করার জন্য। তার এই ছোট্ট একটি বক্তব্য শিশুদের প্রতি তার আবেগকে ফুটিয়ে তুলেছিল।

কচিকাঁচার মেলা, খেলাঘরসহ অন্যান্য শিশু সংগঠনগুলোর অনুষ্ঠানে যেতেন বঙ্গবন্ধু। কিশোরী মেয়ে শেখ হাসিনাকে কচিকাঁচার আসরে ভর্তিও করিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। শিশু থেকে বৃদ্ধ বঙ্গবন্ধুকে সবাই মুজিব ভাই বলে ডাকতেন। এ সম্বোধন তিনি পছন্দও করতেন। তাই বয়সের ব্যবধান কখনোই বাঁধা হয়ে উঠত না।

শিশুদের নির্যাতন, নিপীড়ন ও অধিকার নিশ্চিত করতে ১৯৭২ সালে শিশু আইন তৈরি করেন বঙ্গবন্ধু। তিনি বিশ্বাস করতেন শিশুরাই দেশের ভবিষ্যৎ, তারাই একদিন সোনার বাংলা গড়তে পারবে ।

বাংলাদেশ শিশু একাডেমির চেয়ারম্যান লাকী ইনাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে শিশুদের প্রতি বঙ্গবন্ধুর আন্তরিকতার কথা তুলে ধরতে গিয়ে তিনি বলেন, “উনার হাসিটা ছিল অমলিন, উনার দিকে শিশুরা ছুটে যেত। তখনকার যেসব শিশুরা বঙ্গবন্ধুর অনুষ্ঠানে আসত, তারা বঙ্গবন্ধুর সাথে হাত মেলানোর জন্য, তার কাছে যাওয়ার জন্য, এত আগ্রহী ছিল যে তারা ছুটে যেত। আর বঙ্গবন্ধুও তার অমলিন হাসি দিয়ে বরণ করে নিতেন।”

১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনকে জাতীয় শিশু দিবস ঘোষণার সময় শিশু একাডেমির মহাপরিচালকের দায়িত্বে ছিলেন গোলাম কিবরিয়া।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধু বা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সম্বলিত কোনো অনুষ্ঠান আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার আগ পর্যন্ত হয়নি। আওয়ামী লীগ যখন ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসে তখন থেকে কিছু কাজ শুরু হয়। যেমন, বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন পালন। বঙ্গবন্ধুর আদর্শে শিশুরা যেন অনুপ্রাণিত হয় সেজন্য এই দিনে শিশু দিবস পালন করা হয়। যেমন- ভারতে জওহুরলাল নেহেরুর জন্মদিনে শিশু দিবস।

প্রতিবেদকের বয়স: ১৫। জেলা: ঢাকা।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com