Published: 2021-03-08 16:46:09.0 BdST Updated: 2021-03-08 16:46:09.0 BdST
আনুমানিক ১৮২৭ অথবা ১৮২৮ সালে ১৯ নভেম্বরে ভারতের বারাণসিতে জন্ম তার। চার বছর বয়সে মাতৃহারা হওয়ার পর বাবা পেশোয়া মরুপান্তর তাম্বের হাতে বড় হন তিনি।
এ উপমহাদেশে সে সময়ে মেয়ের জন্ম মানেই যেন তাকে শেকলে বন্দী করে ফেলা, বিয়ের উপযোগী করে তুলতে হাঁসফাস করা। কিন্তু ব্যতিক্রম বলেই তিনি লক্ষীবাঈ। উপমহাদেশের মেয়ে হওয়ার মোটেই যোগ্য ছিলেন না। কারণ তিনি পড়তে ও লিখতে জানতেন, ঘোড়সওয়ারি জানতেন এবং তীর-তলোয়ার চালাতে জানতেন। আবার এসবের জন্য কটুকথা কেউ শোনাতে আসলে তাকে পাল্টা জবাব দেওয়াটাও জানতেন মণি কর্ণিকা।
১৮৪২ সালে ঝাঁসির মহারাজা গঙ্গাধর রাও নাওয়াকারের সাথে বিয়ে হয় মণি কর্ণিকার, বিবাহের সময়ে পাওয়া নামটাই হলো লক্ষীবাঈ।
১৮৫৩ সালে মহারাজ গঙ্গাধর রাওয়ের মৃত্যু হয়। লক্ষীবাঈয়ের কোলে এক পুত্রের জন্ম হলেও সে মারা গিয়েছিল, পরে তারা আনন্দ রাওকে দত্তক নিলেও সিংহাসনের প্রকৃত উত্তরসুরী ছিল না। ফলে ব্রিটিশ শাসকেরা ঝাঁসিকে দখল করে নিয়ে নেয়। ১৮৫৪ সালে রাণীর ওপর কেল্লা ত্যাগের আদেশ জারি করা হয়।
কিন্তু লক্ষীবাঈ মোটেও সাধারণ একজন অবলা বিধবা নারী ছিলেন না। তিনি ছিলেন অসীম সাহসী এবং বুদ্ধিমতি। ছোট থেকেই নিয়ম ভাঙার স্বভাব তিনি আজীবন পুষে রেখেছেন। সেসময়ে নারীরা কঠোর পর্দাপ্রথা মেনে চলত এবং সরাসরি কারোর সাথে দেখা বা কথোপকথন করত না। কিন্তু লক্ষীবাঈ সে প্রথা ভেঙে নিজের পরামর্শক এমনকি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি কর্তৃপক্ষের সাথেও সরাসরি কথা বলেছেন৷
তার ওপর আদেশ জারি করা হলেও তিনি ঝাঁসিকে বাইরের শাসকদের হাতে দিতে রাজি ছিলেন না। প্রথম দিকে তিনি যুদ্ধবিহীনভাবেই শান্তিপূর্ণ একটা সিদ্ধান্তে আসার প্রচেষ্টায় ছিলেন। তিনিই প্রথম উপমহাদেশে নারীদের যুদ্ধ প্রশিক্ষণের নির্দেশ দিয়েছেন। নিম্নবর্ণের হিন্দুদের প্রতিও তার সহমর্মিতা ছিল।
১৮৫৭ সালে সিপাহী বিদ্রোহের শুরু হয়। এই বিদ্রোহ ঝাঁসিতেও দেখা দেয়। বিদ্রোহীদের সাথে ঝাঁসিতে ব্রিটিশদের রক্তক্ষয়ী এক লড়াই হয়েছিল। এসময়ে প্রচুর ব্রিটিশ সৈন্য প্রাণ হারিয়েছে। তবে লক্ষীবাঈ এ সময়েও নিরাপদভাবে তার বাহিনী নিয়ে ঝাঁসি ছাড়তে সক্ষম হন।
যে সময়টাতে নারীদের জন্য রান্নাঘরই ছিল একমাত্র গণ্ডি সেসময়ে রাজ্য পরিচালনা, যুদ্ধ পরিচালনা এবং সবশেষে রণভূমিতে প্রাণত্যাগ ঝাঁসির রাণী লক্ষীবাঈকে ইতিহাসের পাতায় করে তুলেছে অতুলনীয়। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে তার অপরিসীম ভূমিকা উপমহাদেশে তাকে জাতীয় বীরাঙ্গনা উপাধি দিয়েছে। ব্রিটিশদের কাছে নেতিবাচক পরিচিতি থাকলেও দিনশেষে সকলকেই তার বীরত্বের সামনে মাথা নোয়াতেই হয়।
নারী দিবস যেন তার মত এমন প্রথাচূর্ণকারী নারীদের জন্যই। লক্ষীবাঈ শুধু ঝাঁসির রাণীই নন, তিনি শোষকের বিরুদ্ধে অদম্য প্রকৃত এক রাণী।
এরকম সময়ে মনোবল শক্ত রাখতে হয়: সুকুমার বড়ুয়া
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী দুর্ভিক্ষের অভিজ্ঞতা স্মরণ করে অতিমারির এই অস্থির সময়ে শিশুদের মনোবল শক্ত রাখার পরামর্শ দিয়েছেন ছড়াকার সুকুমার বড়ুয়া।
সাইবার দুনিয়ায় 'অনিরাপদ' শিশু
বুলিংসহ নানাভাবে সাইবার দুনিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে শিশু-কিশোররা।
বাবা মা বন্ধু হোক
মা-বাবার সাথে সন্তানের সম্পর্ক অত্যন্ত বন্ধুত্বপূর্ণ হওয়া উচিত বলে আমার কাছে মনে হয়। কিন্তু প্রতিটি সন্তানের সাথে মা-বাবার সম্পর্ক কি বন্ধুর মতো?