খেয়ে না খেয়ে দিন কাটে তার। চোখে আলো থাকলেও, পৃথিবী তার কাছে অন্ধকার। তাই নানান মানুষের হাত ধরে প্রায় দুই বছর আগে চাঁদপুর থেকে একদিন চলে আসে ঢাকায়।
ফুটপাত, রাস্তা, ফুটওভার ব্রিজ হয়ে উঠে তার ঘর। ছোট খাট কাজ আর ভিক্ষা হয়ে উঠে তার বাঁচবার পথ।
একটি শিশুর জন্য কতটুকু নিরাপদ এই ঢাকা শহর, তার প্রমাণ দিতেই যেন বিমান বন্দরের কাছে এক লাইটপোস্ট থেকে বৈদ্যুতিক তার ছিড়ে পড়ে তার গায়ে। ঘটনার দিন তারিখ বলতে পারে না সে। শুধু মনে করতে পারে কী বিভৎস ছিল দিনটি। প্রথমে সোয়েটার, তারপর শার্ট-প্যান্টে আগুন লেগে ছোট্ট শরীর পুড়তে থাকে। পুলিশ আর পথচারীরা হাসপাতালে নিয়ে যায়। জীবনটা বাঁচে, তবে পুড়ে যায় সারা শরীর।
হাসপাতালে কিছু চিকিৎসা পায়। কিন্তু, ঔষধ, খাবার কোথায় পাবে? তাই সুস্থ হবার আগেই নেমে আসে রাস্তায়। ঠাঁই নেয় কমলাপুর রেল স্টেশনে। কষ্টের যেন শেষ নেই। শুরু হয় মহামারি।
লকডাউনে সারাদেশ। কাজ নেই, ভিক্ষাও নেই। শাহিনের কষ্ট আরো বেড়ে যায়। তার সম্পর্কে বলতে গিয়ে এমনটাই জানান রেলস্টেশনে নিয়মিত আসা মোজাম্মেল সাহেব।
লকডাউন উঠে গেছে। স্বাভাবিক হচ্ছে সবকিছু। কিন্তু, স্বাভাবিক হচ্ছে না শাহিনদের জীবন যাপন।
শাহিন জানে না তার কষ্টের শেষ কোথায়? সুস্থভাবে বেড়ে উঠতে পারবে কিনা, তা তার জানা নেই। কিন্তু, কার দোষে শাহিনের জীবন এমন হলো? এর দায় কে নেবে?