আমরা বুঝতে পারি লেখনির মাধ্যমে শোষণ, সাম্প্রদায়িকতার বিষ দাঁত উপড়ে দিতে চেয়েছিলেন তিনি। ধর্মনিরপেক্ষতা আর মানবতার বাণীও প্রচার করেছেন লেখনীর মাধ্যমেই।
কবি কাজী নজরুল ইসলাম বাঙালির কবি। এ পাড় বাংলা ও পাড় বাংলার তরুণ বৃদ্ধ সব বয়সী মানুষের কাছে তার লেখা সমান জনপ্রিয়।
১৮৯৯ সালের ২৪ মে তিনি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। বাবা কাজী ফকির আহমদের দ্বিতীয় স্ত্রী জাহেদা খাতুনের ষষ্ঠ সন্তান তিনি। তার বাবা ফকির আহমদ ছিলেন স্থানীয় মসজিদের ইমাম এবং মাজারের খাদেম। নজরুল ইসলামের ডাক নাম ছিল "দুখু মিয়া"।
মাত্র নয় বছর বয়সে ১৯০৮ সালে দরিদ্র পরিবারের জন্ম নেওয়া নজরুল তার বাবাকে হারান। এরপরই আর্থিক অভাব অনটনে তার লেখাপড়া প্রায় বন্ধ হয়ে যায়।
অল্প বয়সেই পরিবারের ভরণ-পোষণের জন্য নানা পেশায় জড়িয়ে যেতে হয়েছিল তাকে। ছোটবেলায় লেটো গানের দলেও যোগ দিয়েছিলেন তিনি।
লেটো গানের দল ছেড়ে ১১ বছর বয়সে আবারো ফিরে গিয়েছেন স্কুল জীবনে। প্রথমে রাণিগঞ্জ সিয়ারসোল স্কুল এবং পরে মাথরুন স্কুলে ভর্তি হলেও অর্থের অভাবে রুটির দোকানে কাজ শুরু করেন তিনি। তখন থেকেই সুযোগ পেলে কবিতা আর গান লিখতেন কবি।
বেশ বৈচিত্রম্যয় ছিল নজরুলের জীবন। ১৮ বছর বয়সে মাধ্যমিক পরীক্ষা না দিয়েই সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। সেখানে ছিলেন প্রায় আড়াই বছর। সৈনিক জীবন শেষ করে ‘নবযুগ’ নামের এক সান্ধ্য পত্রিকায় সাংবাদিকতাও করেছেন।
ইংরেজদের শোষণের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন নজরুল। প্রকৃতপক্ষে নজরুল ছিলেন সাম্যবাদী। তিনি শোষণের প্রতিবাদ করতেন। প্রতিবাদ করতেন বৈষম্যের। ইংরেজদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে তার কলম যেমন চলেছে তেমন চলেছে শ্রমিকদের ওপর নির্যাতনের প্রতিবাদে। চলেছে সাম্প্রদায়িক বৈষম্যের বিরুদ্ধে। এমনকি নারী-পুরুষের বিভেদের বিরুদ্ধেও লিখেছেন অনেক।
১৯২২ সালে তার লেখা ‘বিদ্রোহী’ কবিতা প্রকাশিত হওয়ার পর তার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। কবিতাগুলোর মাধ্যমে অত্যাচারী আর শোষক সমাজের বিরুদ্ধে জেগে উঠার আহ্বান জানাতেন তিনি। ‘আনন্দময়ীর আগমনে’ কবিতার কারণে জেলও হয়েছিল। সেখানেও করেছেন কাব্যচর্চা।
তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ হলো অগ্নিবীণা। অন্যান্য কাব্যগ্রন্থগুলো হলো প্রবন্ধ বা উপন্যাস রচনার ক্ষেত্রেও দ্যুতি ছড়িয়েছেন নজরুল। লিখেছেন হাজার হাজার গান। সব মিলিয়ে সাহিত্যের জগতে আপন আলোয় উজ্জ্বল তিনি। লিচু-চোর, খুকি ও কাঠবিড়ালীর মতো অনেক শিশু-কিশোর বান্ধব কবিতাও ছিল তার।
১৯৪২ সালে এক দূরারোগ্য রোগে আক্রান্ত হন তিনি। মাত্র ৪৩ বছর বয়সেই এ রোগের কারণে কর্মজীবন শেষ হয় তার। ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের আমন্ত্রণে সপরিবারে বাংলাদেশে আসেন তিনি। পান বাংলাদেশের নাগরিকত্ব। তাকে বাংলাদেশের জাতীয় কবি হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ১৯৭৬ সালে ২৯ অগাস্ট মৃত্যুবরণ করেন তিনি।
তুমি কি জান, সপ্তাহে সাত দিন ২৪ ঘণ্টা হ্যালো শুধুই শিশুদের কথা বলে? বয়স যদি ১৮’র কম হয়, তাহলে তুমিও হতে পার শিশু সাংবাদিক! তাহলে আর কী, নিজের তৈরি প্রতিবেদন, ভিডিও প্রতিবেদন, ভ্রমণকাহিনী, জীবনের স্মরণীয় ঘটনা, আঁকা ও তোলা ছবি, বুক বা সিনেমা রিভিউ পাঠাতে পার আমাদের কাছে। লিখতে পার প্রিয় সাহিত্যিক ও ব্যক্তিত্বকে নিয়েও। এমনকি নিজের কথা লিখতেও নেই কোনো মানা। লেখা ও ভিডিও পাঠানোর ঠিকানা [email protected]। সঙ্গে নিজের নাম, ফোন নম্বর, জেলার নাম ও ছবি দিতে ভুলবে না কিন্তু। তবে তার আগে রেজিস্ট্রেশন করতে ক্লিক করো reg.hello.bdnews24.com |