‘আমরা তোমাকে ভুলিনি’

কোনো কোনো মানুষের জন্মই হয় হয়তো দেশের জন্য, সাধারণ মানুষের কল্যাণের জন্য। তারা নিজেদের জীবন দিয়ে শুধুই অন্যের কল্যাণ করে যান। তারাই তো দেশ প্রেমিকা, দেশ মাতৃকার সন্তান। 
‘আমরা তোমাকে ভুলিনি’

তেমনই একজন মানুষ তাজউদ্দীন আহমদ। যিনি তার সারাটা জীবন শুধুই দেশের জন্য ব্যয় করেছেন। 

২৩ জুলাই বাংলাদেশের প্রথম এই প্রধানমন্ত্রীর জন্মবার্ষিকী।

গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া উপজেলার দরদরিয়া গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে ১৯২৫ সালের এই দিনে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা মৌলবি মুহাম্মদ ইয়াসিন খান এবং মা মেহেরুন্নেসা খানম। তাজউদ্দীনরা ছিলেন চার ভাই ও ছয় বোন। তার শিক্ষাজীবন শুরু হয় গ্রামের মক্তবে। এরপর ভুলেশ্বর প্রাথমিক বিদ্যালয় নামের একটি স্কুলে।

এরপর বিদ্যালয় পরিবর্তনের ধারাবাহিকতায় পড়েছেন কালিগঞ্জ সেন্ট নিকোলাস ইনস্টিটিউশন, ঢাকার মুসলিম বয়েজ হাই স্কুল ও সেন্ট গ্রেগরিজ হাই স্কুলে।  তিনি শৈশব থেকে প্রতিবাদী ও বিপ্লবী মনোভাব পোষণ করতেন।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তিনি সিভিল ডিফেন্স ট্রেনিং গ্রহণ করেন। তাজউদ্দীন আহমদ ১৯৪২ সাল থেকে বয়েজ স্কাউট আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত থেকে আর্ত মানবতার সেবায় নিয়োজিত ছিলেন।

ব্রিটিশ শাসকদের শোষণ থেকে জাতির মুক্তির লক্ষ্যে মুসলিম লীগের হয়ে তিনি আন্দোলন-সংগ্রামের মশাল হাতে নিয়ে যাত্রা শুরু করেন।

১৯৪৮ এ প্রতিষ্ঠিত পূর্ব বাঙলা ছাত্রলীগের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা হয়েছিলেন তিনি।

১৯৪৯ সালে আওয়ামী মুসলিম লীগের জন্ম হয়। সেই দলের একজন নেতা হিসেবে তার রাজনৈতিক জীবনে নতুন মাত্রা যোগ হয়। সেই সময়কার তরুণ নেতা শেখ মুজিবের সঙ্গ লাভ, তার সঙ্গে বাঙালি জাতির মুক্তির লড়াইয়ে এগিয়ে যাওয়াই গণমানুষের এ নেতার অন্যতম কাজ হয়ে দাঁড়ায়।

১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে কাপাসিয়া নির্বাচনী এলাকা থেকে প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। ১৯৬৬ সালে তাজউদ্দীন আহমদ লাহোরে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে যোগদান করেন। এই সম্মেলনেই বাঙালির মহান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালির মুক্তির সনদ ছয় দফা পেশ করেন। ওই বছরই তাজউদ্দীন আহমদ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হন। এর আগে তিনি আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে তাজউদ্দীন আহমদ জাতীয় পরিষদে সদস্য নির্বাচিত হন।

১৯৭১ সালের অসহযোগ আন্দোলনের পটভূমিতে সাংগঠনিক দিকগুলো পরিচালনায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আস্থাভাজন সহযোগী হিসেবে তাজউদ্দীন আহমদ অতুলনীয় দক্ষতা ও বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দেন। ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু কর্তৃক স্বাধীনতা ঘোষণার পর তিনি গ্রেপ্তার হন। বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে পুরো মুক্তিযুদ্ধে যিনি নেতৃত্বে দেন।

বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যার পর তাজউদ্দীন আহমদকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি করা হয়। কারাগারে বন্দি থাকা অবস্থায় ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর কেন্দ্রীয় কারাগারে আরো তিন নেতার সঙ্গে তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। জাতি হারিয়ে ফেলে এই মহান নেতাকে।
 

জন্মদিনে তার প্রতি রইল অকৃত্তিম ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা। 

তুমি কি জান, সপ্তাহে সাত দিন ২৪ ঘণ্টা হ্যালো শুধুই শিশুদের কথা বলে? বয়স যদি ১৮’র কম হয়, তাহলে তুমিও হতে পার শিশু সাংবাদিক! তাহলে আর কী, নিজের তৈরি প্রতিবেদন, ভিডিও প্রতিবেদন, ভ্রমণকাহিনী, জীবনের স্মরণীয় ঘটনা, আঁকা ও তোলা ছবি, বুক বা সিনেমা রিভিউ পাঠাতে পার আমাদের কাছে। লিখতে পার প্রিয় সাহিত্যিক ও ব্যক্তিত্বকে নিয়েও। এমনকি নিজের কথা লিখতেও নেই কোনো মানা।

লেখা ও ভিডিও পাঠানোর ঠিকানা [email protected]। সঙ্গে নিজের নাম, ফোন নম্বর, জেলার নাম ও ছবি দিতে ভুলবে না কিন্তু। তবে তার আগে রেজিস্ট্রেশন করতে ক্লিক করো reg.hello.bdnews24.com

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com