তবুও তার প্রয়াণ দিবসে মনে হয়েছিল লিখি কিছু। তার রচিত অনেক কবিতা, ছড়া, ছোট গল্প উপন্যাস পড়েছি।
কবি গুরু ১৮৬১ সালের ৭ মে, বাংলা ১২৬৮ সনের ২৫ বৈশাখ, কলকাতার জোড়াসাঁকোর বিখ্যাত ঠাকুর পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন জমিদার ও মা সারদা দেবী ছিলেন গৃহিণী। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাহিত্যিক ছন্দনাম ছিল ভানুসিংহ।
সাহিত্যের প্রতিটি শাখায় রয়েছে তার ঈর্ষণীয় বিচরণ। তার মতো গুটিকতকদের হাত ধরেই বাংলা সাহিত্যের সমৃদ্ধি ঘটেছে।
রবীন্দ্রনাথ ছোটবেলা থেকেই কবিতা লিখতেন। ১৮৭৪ সালে মাত্র ১৩ বছর বয়সে তার লেখা 'অভিলাষ' কবিতা তত্ত্ববোধিনী পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। ১৮৭৭ সালে মাত্র ১৬ বছর বয়সে "ভিখারিনী" গল্প রচনার মাধ্যমে ছোটগল্প লেখক হিসেবে তার আত্মপ্রকাশ ঘটে।
জমিদারির কাজ দেখাশোনার করার জন্য রবীন্দ্রনাথ কুষ্টিয়ার শিলাইদহ ও সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে দীর্ঘকাল অবস্থান করেন। এখানেই বসে বসে রবীন্দ্রনাথ তার অনন্য কিছু সাহিত্য রচনা করেন।
১৯১৫ সালে ব্রিটিশ সরকার তাকে নাইট উপাধিতে ভূষিত করে। কিন্তু ১৯১৯ সালে জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে তিনি এই উপাধি বর্জন করেন।
রবীন্দ্রনাথের গল্পের মাঝে কিছুটা কাব্যের ছোঁয়া আছে। মানবপ্রেম, স্বদেশপ্রেম, বিশ্বপ্রেম, ভাবগভীরতা, বাস্তবচেতনা প্রভৃতি তার কাব্যসাহিত্যের বৈশিষ্ট্য।
বিংশ শতাব্দীর বাঙালি সংস্কৃতির অধিকাংশ স্থান জুড়েই রয়েছেন রবীন্দ্রনাথ। নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. অমর্ত্য সেন রবীন্দ্রনাথকে 'হিমালয়প্রতিম ব্যক্তিত্ব' হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রায় ৫২টি কাব্যগ্রন্থ, ১৩টি উপন্যাস, ৩৮টি নাটক ও ৩৬টি প্রবন্ধ ও অন্যান্য গদ্যসংকলন রয়েছে। এছাড়া তার লেখা ছোটগল্পের সংখ্যা শতাধিক এবং গানের সংখ্যা প্রায় ২০০০টি। কিছু সাহিত্য তাঁ মৃত্যুর পরে প্রকাশিত হয়। রবীন্দ্রনাথের মৃত্যুর পর বত্রিশ খণ্ডে প্রকাশিত 'রবীন্দ্র রচনাবলী' বাংলা সাহিত্যের একটি বিশেষ সম্পদ।
তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডি লিট ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯১৩ সালে রবীন্দ্রনাথ তার 'গীতাঞ্জলী' কাব্যগ্রন্থের জন্য সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ পান। বাঙালিদের মধ্যে থেকে এটিই ছিল নোবেল জয়ের প্রথন ঘটনা।
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯৪১ সালের ৭ অগাস্ট, ১৩৪৮ সনের ২২ শ্রাবণ, জোড়াসাঁকোর বিখ্যাত ঠাকুরবাড়িতে মারা যান। কবির ৭৮তম প্রয়াণ দিবসে রইলো শ্রদ্ধাঞ্জলি।