'কিংবদন্তী মহানায়িকা সুচিত্রা সেন স্মৃতি সংগ্রহশালা'য় একদিন

পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে চলচ্চিত্র জগতের সেরা অভিনেত্রী সুচিত্রা সেন। উত্তম কুমারের যোগ্য সঙ্গী সুচিত্রা সেন ৬১টি বাংলা ও হিন্দি সিনেমায় অভিনয় করে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন।
'কিংবদন্তী মহানায়িকা সুচিত্রা সেন স্মৃতি সংগ্রহশালা'য় একদিন

সুচিত্রা সেনের জন্ম ১৯৩১ সালের ৬ এপ্রিল অবিভক্ত বাংলার পাবনা শহরে।

তার নাম ছিল রমা দাশগুপ্ত। সিনেমায় তিনি সুচিত্রা সেন নামেই পরিচিতি লাভ করেন।

সুচিত্রা সেনের প্রথম সিনেমার নাম 'শেষ কোথায়' (১৯৫২)। যদিও পরবর্তীতে সিনেমাটি মুক্তি পায়নি। তবে এরপরে ১৯৫৩ সালে উত্তম কুমারের সঙ্গে 'সাড়ে চুয়াত্তর' ছবিটিতে অভিনয় করেছিলেন, যা তুমুল জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল।

পরবর্তী ২০ বছর উত্তম-সুচিত্রা জুটি আইকন হয়ে দাঁড়ায়।

 

সুচিত্রা সেনের শৈশব-কৈশোর কেটেছে পাবনা শহরের গোপালপুর মহল্লার হিমসাগর লেনে। এখানে তিনি প্রায় ১৬ বছর থেকেছেন। ১৯৪৭ সালে বিয়ের পর কলকাতায় চলে যান।

সুচিত্রা সেনের বাবা করুণাময় দাশগুপ্ত সেসময় পাবনা পৌরসভায় কাজ করতেন। ১৯৫১ সালে তিনি অবসর নেন। ১৯৬০ সালে বাড়িটি জেলা প্রশাসনের কাছে ভাড়া দিয়ে তিনিও সপরিবারে কলকাতায় চলে যান।

দুঃখের বিষয়, ১৯৮৭ সালে বাড়িটি দখল হয়ে যায়। পরে ২০১৪ সালে সরকার বাড়িটি দখলমুক্ত করে।

পাবনা জেলা প্রশাসন এই বাড়ির ভেতরে সুচিত্রা সেনের সংগ্রহশালা করার উদ্যোগ নেয়। বাড়িটির কিছু অবকাঠামোগত উন্নয়ন করে সুচিত্রা সেনের আলোকচিত্র ও তথ্যের সন্নিবেশ ঘটিয়ে বাড়িটিকে সংগ্রহশালায় রূপান্তর করা হয়। যা ২০১৭ সালের ০৬ এপ্রিল দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হয়।

 

বাড়িটিতে প্রবেশের জন্য টিকিট কাটতে হয়। টিকেটের মূল্য মাত্র ১০ টাকা।

বাড়িটি দেখাশোনার কয়েকজন কেয়ারটেকার রয়েছেন।

পাবনা জেলা প্রশাসন বাড়িটিকে বেশ সুন্দরভাবে সাজিয়েছেন। বাড়ির পেছনে ও সামনে সাজানো ফুলের গাছ বাড়ির সৌন্দর্যকে কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে।

সুচিত্রা সেন সম্পর্কে অনেক তথ্য জেনে ও তার অনেক ছবি দেখে আমার বেশ ভালো লাগল।

জেলা প্রশাসন বাড়িটির যথেষ্ট অবকাঠামোগত উন্নয়ন করলেও কিছু কমতি রয়েছে। প্রায় সব ঘরের বৈদ্যুতিক ফ্যানগুলোতে সমস্যা রয়েছে। সেগুলো চালু করলে একদিকে বাতাস পাওয়া যায় না, অন্যদিকে অদ্ভুতুড়ে শব্দ হতে থাকে।

আমি, আমার ফুফাতো ও মামাতো ভাই, তিনজন গিয়েছিলাম সুচিত্রা সেনের পৈত্রিক নিবাসে। সবাই অনেক অনেক ছবি তুলেছি।

বাড়িটি ঘুরে দেখার সময় মনে হলো, এই বাড়িটিতেই কিংবদন্তী মহানায়িকা সুচিত্রা সেন কাটিয়েছিলেন তার সোনালি দিনগুলো। এটা ভেবেই শিহরিত হয়ে উঠলাম!

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com