১৮৬১ সালের ৭ মে কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। সেদিন ছিল ১২৬৮ বঙ্গাব্দের ২৫ বৈশাখ।
তার বাবা দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর আর মা সারদা দেবী। তার পরিবার ছিল সংস্কৃতিমনা। স্কুলে ভর্তি করানো হলেও রবীন্দ্রনাথ নিয়মিত ছাত্র ছিলেন না। বাড়িতেই তার পড়াশোনার ব্যবস্থা করা হয়। কৈশোরেই লেখালেখির হাতেখড়ি হয়।
শিশু সাহিত্যেকে সমৃদ্ধ করতে তার অবদান অপরিসীম। মাকে বিপদ থেকে বাঁচানোর রূপকথা নিয়ে তিনি লিখেছেন ‘বীরপুরুষ’ কবিতা। এ কবিতায় তিনি তুলে ধরেন মাকে বাঁচাতে এক কিশোরের বীরত্বের গল্প।
মায়ের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ পেয়েছে তার অন্যান্য কবিতাতেও। ‘জন্মকথা’ কবিতায় কবি এক খোকার গল্প লিখেন যে কৌতুহলী হয়ে তার মাকে জিজ্ঞাসা করে কোথায় খুঁজে পেয়েছে।
তিনি লিখেছেন-
‘খোকা মাকে শুধায় ডেকে,
এলেম আমি কোথা থেকে’
আরেক কবিতায় লিখেছেন মা গো, আমায় ছুটি দিতে বল, সকাল থেকে পড়েছি যে মেলা।
তার ‘শিশু’, ‘খাপছাড়া’, ‘শিশু ভোলানাথ’ ‘পাতা,’ ‘ছড়া’ সহ নানান কাব্যগ্রন্থে রয়েছে শিশুদের নিয়ে কবিতা। পাতা কাব্যগ্রন্থের এ সকল কবিতা যেকোনো শিশুর মনকেই আনন্দ দিবে। কখনো রবীন্দ্রনাথ রূপকথার গল্পগুলোকে ছন্দে বেঁধেছেন, কখনো লিখেছেন কৌতুহলী শিশু মনের কথা। প্রকৃতিকেও মজার ছলে তুলে ধরেন তিনি। ‘আমাদের ছোটো নদী চলে বাঁকে বাঁকে’ কিংবা ‘তাল গাছ এক পায়ে দাঁড়িয়ে’ যেন তারই উদাহরণ।
রবীন্দ্রনাথের ছোটগল্পের জুড়ি নেই। তার ছোটগল্পের শিশু চরিত্রগুলো পাঠকের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন। ‘বলাই’ গল্পের বলাই, ‘পোস্টমাস্টার’ গল্পের রতন কিংবা ‘ছুটি’ গল্পের ফটিক বেঁচে থাকবে সকল কিশোরের হৃদয়ে। অনেক মজার মজার নাটিকাও লিখেছেন তিনি। একটি হাস্যরসাত্মক নাটিকা হল ‘চিন্তাশীল।’ এমন অনেক রচনা শিশু সাহিত্যকে করেছে সমৃদ্ধ। তাই চিরকাল শিশুদের কাছে ভালোবাসার নাম হয়ে থাকবে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।