পরীক্ষার খাতায় বেশি নম্বর, আদতে শিক্ষিত হচ্ছি কি?

শিক্ষা হচ্ছে মানুষের জীবনের আয়না। সে আয়না থেকেই মানুষ জানতে পারে কী মন্দ কী ভালো। এ আয়নাতেই ফুটে উঠে তার বিবেকের ছায়া।
পরীক্ষার খাতায় বেশি নম্বর, আদতে শিক্ষিত হচ্ছি কি?

যেহেতু আমরা শিক্ষার জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে যাই, তাই এসব প্রতিষ্ঠান বা আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাই যদি সঠিক না হয় তাহলে আমাদের আয়নাটা ঘোলাটেই রয়ে গেল।

প্রথমত আমাদের স্কুল নিয়েই লেখা যাক।

আমাদের শিক্ষা পরীক্ষা নির্ভর। পরীক্ষার খাতায় ভালো লিখতে পারলেই ধরা হয় সে ভালো শিখেছে। তবে প্রকৄতপক্ষে সে কতটুকু শিখেছে? আমাদের লেখাপড়া মূলত জ্ঞান অর্জন নয় পরীক্ষার খাতা ভরে লিখে আসা আর ফলাফল ভালো করা। আমাদের দেশে কয়েক বছর আগে থেকেই সৃজনশীল পদ্ধতিতে পাঠদান শুরু হয়েছে। তবে আমাদের সৃজনশীল শিক্ষা গ্রহণ করতে আমরা কতটা সক্ষম তা নিয়ে কেউ ভাবেনি।

দেখা যায় প্রায় অনেক শিক্ষকই প্রশ্নের উত্তর চান বইয়ের সাথে হুবহু মিলিয়ে। অনেক সময় কত পাতা লেখা হয়েছে তার উপর নির্ভর করে নাম্বার দেওয়া হয়।

পরীক্ষার ক্ষেত্রে সময়টা সৃজনশীল ক্ষেত্রে বিরাট বাধা হয়ে দাঁড়ায়। কারণ সাতটা সৃজনশীল দুই ঘণ্টা ত্রিশ মিনিটে দেওয়া যায়, তবে সেটা সৃজনশীল হয় কিনা আমার জানা নেই।

সৃজনশীল যেহেতু ভাবার বিষয় তাই এটুকু সময়ে সৃজনশীল লেখা সম্ভব হয়ে ওঠে না।

অন্যদিকে পাঠ্য বইয়ের পাশাপাশি আমাদের অন্য বই পড়ে জ্ঞান অর্জন করা যায় এ কথা তো আমরা প্রায় ভুলতে বসেছি। আমাদের শিক্ষকরা বই পড়া নিয়ে শিক্ষার্থীদের কোনো উৎসাহ দেন না। কেউ কেউ হয়তো দেন। কিন্তু এমন শিক্ষক আমি পাইনি।

অথচ প্রমথ চৌধুরী বলেছেন, এ দেশে লাইব্রেরির সার্থকতা হাসপাতালের চাইতে কিছু কম নয় এবং স্কুল কলেজের চাইতে একটু বেশি। এ কথার সাথে আমি একমত। কষ্ট হয় যখন দেখি আমার স্কুলে বিরাট লাইব্রেরি বইয়ে ঠাসা কিন্তু বই পড়ার সুযোগ নেই বললেই চলে।

বর্তমানে কিছু মানুষ শিক্ষাকে নিয়ে গেছে ব্যবসার দিকে। তারা নিয়ম না মেনে যত্রতত্র বেসরকারি স্কুল গড়ে তুলছে। তাদের মূল লক্ষ টাকা অর্জন, সঠিক শিক্ষা প্রদান করা নয়।

দেখা যায় এসব স্কুলের নেই মাঠ, নেই লাইব্রেরি। খুব সামান্য জায়গায় এসব স্কুল গড়ে উঠেছে। এসব স্কুল তৈরি করে ছাত্র ছাত্রীদের কাছ থেকে নানা উপায়ে টাকা আদায়ের নিয়ম। এরা চাপিয়ে দেয় ছোট ছোট শিশুদের কাঁধে ভারি ব্যাগ যাতে ঠাসা থাকে গাইড, বিভিন্ন নোট, প্রতি বিষয়ের খাতা, পাঠ্য বই।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com