বাংলাদেশে যে কটি মুসলিম জমিদার বাড়ি এখনও খুব ভালোভাবে দাঁড়িয়ে আছে তার মধ্যে অন্যতম এই জমিদার বাড়ি।
চারদিকে দেয়ালবেষ্টিত একতলা জমিদার বাড়িটির ভেতরে আছে বিশাল শিশু গাছ এবং নানা জাতের ফুল গাছ, আছে সাদা জাতের কাঠ গোলাপও।
সবুজে ঘেরা জমিদার বাড়ির সামনের দিকে রয়েছে পারিবারিক কবরস্থান। পূর্ব-দক্ষিণ কোণে রয়েছে একটি মসজিদ। বিশাল তিনটি গম্বুজ মসজিদের সৌন্দর্য বাড়িয়ে তুলেছে আর জমিদার বাড়ির সৌন্দর্য বাড়িয়ে তুলেছে এই অসাধারণ মসদিজটি।
মসদিজদের সামনে আছে বিশাল পুকুর। জমিদার বাড়ির পেছনে রয়েছে আম বাগান এবং বাগানের মাঝখানে রয়েছে টালির শেড ঘর। ধারণা করা হয় এটি ছিল জমিদার বাড়ির নারীদের আড্ডাখানা।
জমিদার বাড়িটি কবে বা কখন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সে সম্পর্কে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি তবে জানা যায় জমিদারদের পূর্ব পুরুষ আফগানিস্তানের গজনী থেকে দেলদুয়ারে এসেছিলেন।
জমিদার বাড়ির প্রতিষ্ঠাতা হলেন ফতেহদাদ খান গজনবী লোহানি। আফগানিস্তানের গজনী থেকে আসায় তাদের নামের শেষে গজনবী লোহানি খেতাব ব্যবহার করতেন।
জমিদার বাড়ির দুইজন আলোচিত সুনামধন্য জমিদার হলেন স্যার আবদুল করিম গজনবী এবং স্যার আবদুল হালিম গজনবী যারা বাঙালি নারী জাগরণের অগ্রদূত ও কবি বেগম রোকেয়ার বোন করিমু নেসা খানম এবং আব্দুল হাকিম খান গজনবীর সন্তান।
১৮৭২ সালে জন্ম নেওয়া স্যার আবদুল করিম গজনবী ইংল্যান্ড এবং জার্মানিতে পড়ালেখা করেন। ১৮৯৪ সালে তিনি জমিদারির দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি ব্রিটিশ ভারত শাসনামলে ব্রিটিশ সরকারের দুইবার মন্ত্রী ছিলেন।
১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত হলে এই জমিদার বাড়ির জমিদারিরও সমাপ্তি ঘটে।