বিজ্ঞানীদের ধারণা প্রত্যেক মানুষেরই একটা নির্দিষ্ট সীমা পর্যন্ত এই ধরনের ক্ষমতা রয়েছে। এরকম বিষয়গুলো আলোচিত হয় প্যারাসাইকোলজি বিভাগে। এটি সাইকোলজির একটি মজার শাখা।
১৯৩৪ থেকে ১৯৩৯ সাল পর্যন্ত ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের গণিতের অধ্যাপক প্রফেসর এসজি সোয়াল (১৮৮৯-১৯৭৯) এক লাখ মানুষের মধ্যে একশ ৬০জনকে নিয়ে টেলিপ্যাথি টেস্ট করেন। একইভাবে প্যারাসাইকোলজিস্ট বাসিল সাকলেটন এবং রিটা এলিয়েট কিছু ফলাফল পেতে সক্ষম হন যেটাকে কোনোভাবেই কাকাতালীয় বলে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। তবে কেন একজন অন্যের মনোজগতে বিচরণ কিংবা চেতনাকে আচ্ছন্ন করতে পারছে, সে রহস্য আজও অজানা।
টেলিপ্যাথি পরীক্ষার একটা সহজ প্যাটার্ন রয়েছে। এক্ষেত্রে সাবজেক্ট এবং পরীক্ষক মুখোমুখি বসেন এবং পরীক্ষকের সামনে থাকে একটা মনিটর যেখানে একটার পর একটা ছবি অথবা চিহ্ন উৎপন্ন হতে থাকে। পরীক্ষকের সামনে যে ছবি বা চিহ্নের উৎপত্তি হচ্ছে সাবজেক্টকে সেটা বলতে কিংবা এঁকে দেখাতে হয়। সাবজেক্ট অর্থাৎ টেলিপ্যাথি পরীক্ষকের মস্তিষ্কের ইমেজটা পড়তে পারে এবং তার ওপর ভিত্তি করেই ছবি আঁকে।
বছরের পর বছর এই পদ্ধতিতে আশ্চর্যজনক সাফল্য পাওয়া যাচ্ছে। সত্যিকার অর্থে টেলিপ্যাথি ঠিক কিভাবে কাজ করে সেটি এখনো ধোঁয়াশা। আসলেই কি এমন কিছু মানুষ আছে যারা প্রকৃতির আশীর্বাদপুষ্ট, যারা সত্যিই অন্যের আত্মা দেখতে পারে; বলতে পারে অন্যের মনের কথা? কিংবা নিমিষেই বদলে দিতে পারে অন্যের চিন্তাধারা? সত্যিই কি এর কোনো অস্তিত্ব আছে? হয়তো একদিন সেই রহস্যের দ্বার উন্মোচিত হবে। তবুও হয়ত প্রশ্ন থেকে যাবে কেমন করে ঘটে এই এই অদ্ভুত ক্ষমতার প্রকাশ? কেনই বা অল্প ক’জনেই এর প্রয়োগ করতে পারে?
ভালো মতো লক্ষ্য করলে দেখা যাবে আমরা আমাদের জীবনের কোনো না কোনো ক্ষেত্রে এরকম কিছু না কিছু ঘটনার সম্মুখীন হয়েছি। যেমন ধরুন আপনি কারও কথা গভীরভাবে চিন্তা করছেন ঠিক সেই মুহূর্তেই সেই ব্যাক্তিটি আপনার বাসায় এসে হাজির। এসব বিষয়কে আমরা কাকতালীয় ভেবে পাশ কাটিয়ে দিলেও বিষয়টা কিন্তু মোটেও কাকতালীয় নয়। এটি হলো আমাদের মস্তিষ্কের এক অতীন্দ্রিয় সংবেদনশীলতা, যেটি অসীম ক্ষমতা। যেখানে আমরা চাইলেও প্রবেশ করতে পারি না।
এসব নিয়ে গবেষণা হলেও বিজ্ঞানভিত্তিকভাবে তেমন কোনো প্রমাণ হাজির করা যায়নি এখনও। টেলিপ্যাথি বিষয়টি বৈজ্ঞানিক কল্প কাহিনী ও চলচ্চিত্রে ব্যবহার হয় বেশি।