গ্রামাঞ্চলে এক সময় প্রায় শতাধিক গ্রামীণ খেলাধুলার প্রচলন ছিল। তার মধ্যে ছেলেমেয়েরা খেলত হা-ডু-ডু, কাবাডি, গোল্লাছুট, দাঁড়িয়াবাঁধা, কপালটোকা, কানামাছি, নৌকাবাইচ, লাঠিখেলা, এক্কাদোক্কা, ওপেন্টি বায়োস্পকোপ, বৌছি, কুমির কুমির খেলা, মোরগলড়াই, লুকোচুরি, পুতুল খেলা, রান্নাবাটিসহ অনেক খেলা।
এখনও হা-ডু-ডু, কাবাডি, লাঠিখেলাসহ হাতেগোনা কয়েকটি খেলার প্রচলন আছে। এখনও গ্রামাঞ্চলে পহেলা বৈশাখ ও গ্রামীণ মেলার সময় এসব খেলা অনুষ্ঠিত হয়।
বর্তমানে শহরাঞ্চলে তো বটেই গ্রামাঞ্চলেও খোলা জায়গা বা খেলার মাঠের স্বল্পতার কারণে অনেক খেলা হারিয়ে যাচ্ছে। ফলে ভিডিও গেইম, টেলিভিশন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, মোবাইল ফোন স্থান দখল করে নিয়েছে।
পড়াশোনা যেমন ছেলেমেয়েদের মানসিক বিকাশ ঘটায় তেমনি শারীরিক বিকাশ ঘটাতে খেলাধুলার কোনো বিকল্প নেই। আগেকার দিনে গ্রামাঞ্চলে হা-ডু-ডু, কাবাডি ও লাঠিখেলার জন্য রীতিমত প্রতিযোগিতা চলত। এখন কোথায় হারিয়ে গেছে সেসব।
আগেকার দিনে প্রতিবছর সব স্কুল কলেজ, মাদরাসাগুলোতে নানা ধরনের খেলাধুলার আয়োজন করা হতো। বর্তমানে অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নিজস্ব কোন খেলার মাঠও নেই। ফলে শিশুদের শারীরিক বিকাশ ঘটছে না।
এখন ছেলেমেয়েরা গ্রামবাংলার হাজার বছরের এসব গ্রামীণ খেলাধুলা তো করেই না, এমনকি এসব খেলাধুলার নামও জানেনা। অথচ এক সময় এসমস্ত খেলাধুলাকে বাদ দিয়ে বাঙালি ঐতিহ্যকে কল্পনাও করা যেত না।
এ অবস্থা চলতে থাকলে হয়ত অচিরেই গ্রামীণ তথা দেশীয় খেলাধুলা আমাদের সংস্কৃতি থেকে হারিয়ে যাবে। পরিণত হবে রূপকথার গল্পে।