সচেতনতাই পারে নদীকে বাঁচিয়ে রাখতে

আমাদের দেশ নদী মাতৃক দেশ। পদ্মা, মেঘনা, যমুনা, কর্নফুলীর মতো ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় সাত শতাধিক নদী বয়ে চলে এই বাংলার বুক চিরে।
সচেতনতাই পারে নদীকে বাঁচিয়ে রাখতে

নদী বাংলাদেশের অন্যতম প্রাকৃতিক সম্পদ। এই নদী সম্পদকে কাজে লাগিয়ে আমরা আমাদের যোগাযোগ, বানিজ্য, কৃষি ও মাছসহ জীবনযাত্রার নানা দিকে উপকৃত হই।

অথচ বর্তমান সময়ে আমরা খবরের কাগজ, বই, ম্যাগাজিন খুললেই দেখতে পাই বিভিন্ন নদীতে কলকারখানার ক্ষতিকর বর্জ্য, ভারি ধাতু, মানুষের ফেলা পলিথিন, অর্থাৎ নানা রকম আবর্জনা আমাদের নদী সম্পদকে নষ্ট করছে। নদী হারাচ্ছে তার নাব্যতা। এমন কি অনেক শাখা নদী আজ বিলুপ্ত হয়ে গেছে, আরও কিছু বিলুপ্তির পথে।  

বিশেষজ্ঞদের হিসাব অনুযায়ী গত ৪৬ বছরে দেশে প্রায় ২৫ হাজার কিলোমিটার নদীপথ বিলুপ্ত হয়ে গেছে। অর্থাৎ ইতোপূর্বে বাংলাদেশের নদীর সংখাছিল ১৩০০-র মতো। সে সংখ্যা এখন কমে সাতশ।

পরিবেশ বিশেষজ্ঞ ও নদী গবেষক ড. এস আই খানের মতে, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালের প্রথম জরিপে নদীপথ ছিল ৩৭ হাজার কিলোমিটার যা ২০০২ সালে কমে ছয় হাজার কিলোমিটারে নেমে আসে। ২০১০ সালে কমে আসে চার হাজার কিলোমিটারে। আর শুষ্ক মওসুমে দেশের নদীপথ দুই হাজার ছশ কিলোমিটারে।

নদী বিশেষজ্ঞর মতে, এই প্রবণতা অব্যাহত থাকলে আগামী ২০৫০ সালে দেশে কোন নদীপথ অবশিষ্ট থাকবে কী না সে বিষয়ে সন্দেহ রয়েছে। যা দেশের জন্য হুমকি স্বরূপ।  

তাই এই অবস্থা থেকে আমাদের নদী সম্পদকে রক্ষা করতে হবে। আর সেটা করতে হলে আমাদের নদী সম্পদের প্রতি অবশ্যই যত্নশীল হতে হবে। আর তা একদিনে গড়ে ওঠে না, এমনকি কারও একার পক্ষেও করা সম্ভব না।

তাই প্রত্যেককে শিশু বয়স থেকে নদী সম্পদ রক্ষায় কাজ করতে আগ্রাহী করে গরে তুলতে হবে। অর্থাৎ কি করলে নদী দূষণ হবে না সে বিষয়ে সচেতন করতে হবে। তাই শিশুসহ প্রত্যেক নাগরিককে নদী সম্পদ রক্ষায় কাজ করতে আগ্রহী করে গড়ে তুলতে হবে। তাহলেই আমরা আমাদের নদী সম্পদকে বাঁচিয়ে রাখতে পারব।

পৃথিবীর বুকে 'নদীমাতৃক  বাংলাদেশ' এই ভৌগলিক নামটি অটুট রাখতে হলে আমাদের দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ ভাবে সচেতনতার সাথে কাজ করতে হবে তবেই নদী সম্পদ রক্ষা দিবস পালন করা সার্থক হবে।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com