বাংলাদেশের বন্ধু হ্যারিসন
তিনি ১৯৪৩ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি ইংল্যাণ্ডের ল্যাংকশায়ারের লিভারপুলে জন্ম নেন। বাবার নাম হ্যারল্ড হার্গ্রিস হ্যারিসন ও মা লুইসে। তার বাবা ছিলেন বাস কন্ডাক্টর আর মা একটি দোকানে সহকারীর কাজ করতেন। তিনি মা বাবার চতুর্থ এবং ছোট সন্তান।
হ্যারিসন পেনি লেনের কাছে ডাভডেল প্রাইমারি স্কুলে প্রাথমিক শিক্ষা শুরু করেন। তারপর ১৯৫৯ সালে লিভারপুল ইন্সটিটিউট ফর বয়েজে ভর্তি হন। ১৯৫৯ সাল পর্যন্ত হ্যারিসন এই প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করেন।
লিভারপুল ইন্সটিটিউটে অধ্যায়ন কালেই ‘স্কিফ’ নামে একটি ব্যান্ডের দলে যোগ দেন। তখন হ্যারিসনের বয়স অল্প থাকায় সেই দলে যোগ দিতে পারেননি।
পরবর্তীতে তার গিটার বাজানোর দক্ষতায় মুগ্ধ হয়ে লেলোন তাকে ‘দ্যা কোয়ারিমেন’ ব্যান্ডে অন্তর্ভুক্ত করেন। জীবিকার তাগিদে ১৯৫৯ সালে হ্যারিসন ব্লাকারস নামে একটি স্থানীয় ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে কয়েক মাস কাজ করেন।
১৯৬৬ সালে লন্ডনে ভারতীয় সেতার বাদক পণ্ডিত রবি শঙ্করের সাথে পরিচয় হয় হ্যারিসনের। এরপর তিনি ভারতে এসে গান গাওয়া শুরু করেন। রবি শঙ্করের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে হ্যারিসন পাশ্চাত্য সঙ্গীতের সাথে ভারতীয় সঙ্গীতের মিশ্রণ ঘটান।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় রবি শঙ্কর স্বাধীনতা যুদ্ধের শরণার্থীদের জন্য অর্থ সংগ্রহ করতে ভারতবর্ষ ও পাশ্চাত্যের অনেক বিখ্যাত শিল্পীকে একত্রিত করেন। তার মধ্যে জর্জ হ্যারিসন ছিলেন। এরই প্রেক্ষিতে ১৯৭১ সালে পহেলা অগাস্ট জর্জ হ্যারিসনকে সঙ্গে নিয়ে রবি শঙ্কর নিউইয়র্ক ম্যাডিসন স্কোয়ার গার্ডেনে ‘কনসার্ট ফর বাংলাদেশ’ নামে কনসার্ট আয়োজন করেন।
এই কনসার্টে প্রায় ৪০ হাজার দর্শক উপস্থিত ছিল। কনসার্ট থেকে পাওয়া আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের ডলার, বাংলাদেশি শরণার্থী ও যুদ্ধে বিপর্যস্ত মানুষদের কল্যাণের জন্য দেওয়া হয়েছিল।
জর্জ হ্যারিসন ২০০১ সালে ৫৮ বছর বয়সে ক্যান্সারে ভুগে মারা যান।