শিশুদের যুদ্ধের হাতিয়ার আর নয়

পৃথিবী জুড়ে দেশে দেশে চলছে যুদ্ধ-বিগ্রহ, সহিংসতা ও হানাহানি। আর আমাদের দেশে জুড়েও সেই যুদ্ধের ফলে রোহিঙ্গা ইস্যুতে নৈরাজ্য সৃষ্টি হয়েছে। শিশুরা যেখানে ভুগছে বেশি। যুদ্ধ কবলিত এলাকায় চলছে নানা অপকর্ম। এসব অপকর্মের সাথে জড়িয়ে যাচ্ছে শিশুরা। তাদের হাতে ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে আগ্নেয়াস্ত্র।
শিশুদের যুদ্ধের হাতিয়ার আর নয়

সোমালিয়া, সিরিয়া, ইয়েমিন, ইরান, নাইজেরিয়া, ক্যামেরুন এবং দক্ষিণ সুদানের মতো যুদ্ধকবলিত দেশে শিশুদেরকে জোরপূর্বক যুদ্ধে নামিয়ে দেওয়া হচ্ছে। শিশুদেরকে যুদ্ধের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

শিশুদেরকেও আত্মঘাতী বোম্বার হিসেবে যুদ্ধে ব্যবহার করা হচ্ছে। জোরপূর্বক ধর্ষণ, নির্যাতন আর অপহরণ তো রয়েছেই। বিশেষ করে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা শিশুদের দিকে তাকালে তা স্পষ্ট দেখা যায়।

সম্প্রতি গণমাধ্যম ও সংবাদমাধ্যমগুলিতে প্রকাশিত সংবাদে এসব খবর দেখে ও পড়ে মরমে মরে যাই। এর কোনো বিহিত করার কথা কি বিশ্বজুড়ে বড়রা ভাবছেন?

একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ তাদের একটি প্রতিবেদনে জানায়, যুদ্ধরত পক্ষগুলো ভীষণভাবে আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের অমর্যাদা করছে এবং শিশুরা নিয়মিত হামলার শিকার হচ্ছে। 

তাদেরকে যুদ্ধের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে, সেনাবাহিনীতে ভর্তি, আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী এবং তাদের মানব প্রাচীর হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

এখানেই শেষ নয়, যুদ্ধের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে আফ্রিকান অঞ্চলের শিশুরা। ইউনিসেফের তথ্য মতে, ২০১৭ সালে নাইজেরিয়া, শাদ, নাইজার এবং ক্যামেরুনে অন্তত ১৩৫ জন শিশুকে আত্মঘাতী বোমা হামলা চালাতে বাধ্য করা হয়েছে। এ সংখ্যা আগের বছরের চেয়ে পাঁচ গুণ বেশি।

২০১৩ সালে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ায়, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রে শিশুদের ধর্ষণ ও হত্যা এবং ২০১৭ সালের প্রথম দশ মাসে সোমালিয়ায়, প্রায় ১৮০০ শিশুকে জোর করে সেনাবাহিনীতে ভর্তি করা হচ্ছে।

একই সালে দক্ষিণ সুদানের সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো ১৯ হাজারেরও বেশি শিশুকে নিয়োগ দিয়েছে। মধ্যপ্রাচ্য এবং মধ্য ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায়ও সংঘাতের কারণে শিশুরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

ইয়েমেনে তিন বছরের সংঘাতে হতাহত হয়েছে অন্তত পাঁচ হাজার শিশু। এক কোটি ৮০ লাখ শিশু অপুষ্টিতে ভুগছে।

ইরাক ও সিরিয়ায় শিশুদেরকে মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। তারা অবরুদ্ধ ও হামলার লক্ষ্যবস্তু। বছরের প্রথম নয় মাসে আফগানিস্তানে সংঘাতের কারণে প্রায় ৭০০ শিশু নিহত হয়েছে।

বিশ্বের সব শান্তিকামী মানুষ, প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের কাছে একজন শিশু হিসাবে সব নির্যাতিত শিশুর হয়ে আমার আহ্বান, শিশুদের দিয়ে যুদ্ধ আর নয়! আর নির্যাতন নয়!  

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com