লোকায়ন জীবনবৈচিত্র্য জাদুঘর

ঠাকুরগাঁও জেলার পূর্ব আকচা গ্রামে মেহনতি মানুষের জীবনবৈচিত্র্য নিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে লোকায়ন জীববৈচিত্র্য জাদুঘর।
লোকায়ন জীবনবৈচিত্র্য জাদুঘর

বাংলাদেশের প্রাচীনতম জনপদ ঠাকুরগাঁও। যার প্রতিটি পরতে পরতে ঐতিহ্য আর শ্রমজীবী মানুষের গল্প জড়িয়ে আছে।

'লোকায়ন' এই মেহনতি মানুষের শতাব্দীর পর শতাব্দীর জীবন-যাপনের যে যুদ্ধ, উপকরণ, বৈচিত্র্য, সেই চেতনাকে ধারণ করেই প্রতিষ্ঠিত।

এ জাদুঘর মূলত চারটি গ্যালারিতে ভাগ করা- নদী গ্যালারি, সমতলের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী গ্যালারি, তৃণমূল লোকজ গ্যালারি, মুক্তিযুদ্ধ গ্যালারি।

নদী গ্যালারিটি ২০১৬ সালে দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। নদীমাতৃক বাংলাদেশের প্রায় সবগুলো নদীর পানি গ্যালারিতে সংরক্ষণ করা আছে। সম্প্রতি যে নদী হারিয়ে যাচ্ছে তারও পানি থেকে যাচ্ছে এই নদী গ্যালারিতে।

তাছাড়া নদীভিত্তিক বিভিন্ন পেশা, বৃত্তি-নির্ভর উপকরণ, বাংলাদেশের নদ-নদীর তালিকা ও সে সংক্রান্ত তথ্য, নৌকা, নদীভিত্তিক উৎসব, মৎস্য, জলজ উদ্ভিদ ইত্যাদি সম্পর্কিত নানা তথ্য এই গ্যালারিতে উপস্থাপিত হয়েছে। 

সাঁওতাল ও ওঁরাওদের জীবনযাপন, সংস্কৃতি, বাসস্থান ও পোশাক, খাদ্যাভ্যাস, পেশা, উৎসব সামাজিক আচার-অনুষ্ঠানের বিভিন্ন উপকরণে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী গ্যালারিটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সমতালের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সংক্রান্ত কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যও এ গ্যালারিতে প্রদর্শন করা হয়েছে।

তৃণমূল লোকজ গ্যালারি ২০০৬ সালে দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। তৃণমূল লোকজ গ্যলিারিতে প্রদর্শিত কিছু উল্লেখযোগ্য উপকরণ হলো, কৃষিজ উপকরণ, ভেষজ এবং সংস্কারযুক্ত চিকিৎসা উপকরণ, বিভিন্ন কাল ও সময়ের মুদ্রা/কাগজি নোট, অলংকার, ধর্মীয়/মাঙ্গলিক উপকরণ, ক্রীড়া/বিনোদন উপকরণ, গৃহ/বাসস্থান/গৃহস্থলী উপকরণ, বৈবাহিক উপকরণ, মৃৎ শিল্প, দলিল/চিঠিপত্র/নথিপত্র, লোকশিল্প ইত্যাদি।

মুক্তিযুদ্ধ গ্যালারিতে প্রাচীন যুগ, মধ্যযুগ, ১৭৫৭ থেকে ১৯৪৭ পর্ব, ১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ পর্ব এবং 'মুক্তিযুদ্ধের নয় মাস' পর্বে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি গ্যালারিতে উপস্থাপনা বিস্তৃত। এছাড়া এ গ্যালারির দোতলায় একটি আধুনিক মিলনায়তন, মুক্ত মঞ্চ ও মুক্তিযুদ্ধের তথ্য সমৃদ্ধ অডিও-ভিজ্যুয়াল লাইব্রেরি এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক চলচ্চিত্র এবং তথ্যচিত্র নিয়মিত প্রদর্শনের মাধ্যমে বিশেষত নতুন প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস উপস্থাপনাই মুক্তিযুদ্ধ গ্যালারি মূল লক্ষ্য।

লোকায়ন জীবনবৈচিত্র্য জাদুঘর প্রতিবছর ফল উৎসব, নবান্ন উৎসব, পৌষমেলা, পিঠা উৎসব, বর্ষবিদায় ও বর্ষবরণ উৎসব এর আয়োজন করে থাকে।

২০০৬ সালে ইএসডিও সংস্থার ব্যবস্থাপনায় এই জাদুঘরটি প্রতিষ্ঠা করা হয়।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com