শারীরিক শিক্ষা নিয়ে লুকোচুরি

শারীরিক শিক্ষা নিয়ে লুকোচুরি

ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত 'শারীরিক শিক্ষা’ বইটি বাধ্যতামূলক হলেও এর বয়ঃসন্ধি ও প্রজনন স্বাস্থ্য বিষয়ক অধ্যায়গুলো শিক্ষকরা এড়িয়ে যান। শরীর চর্চার শিক্ষক বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পুরুষ হওয়ায় ছাত্রীদের জন্য এ বইটি যেন লুকোচুরির বিষয়ে পরিণত হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ জিনিসগুলো অজানা থাকায় সমস্যাকে সঙ্গী করেই পার হচ্ছে তাদের কৈশোর।

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে  কথা বলে জানতে পারি, এ অধ্যায়গুলো শিক্ষকরা ক্লাসে পড়ান না। বাসায় পড়ে নিতে বলেন। প্রশ্ন করলে বলেন বড় ক্লাসে উঠে জানতে পারবে। কোনো জায়গায় আবার পড়ানো হলেও তা শুধু ক্লাসে বসে নিজে নিজে পড়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ। খোলামেলা আলোচনা হয় না অধ্যায়গুলোর।

কয়েক মাস আগে আমার লেখা এ বিষয়ক একটি প্রতিবেদন হ্যালোতে প্রকাশিত হয়েছিল। যেখানে ঢাকা জেলা শিক্ষা অফিসার শাহিদা বেগম নাজমা বিষয়টি অবগত করার জন্য হ্যালোকে ধন্যবাদ জানান।

এ বিষয়ে সংবাদে কথা বলা মতিঝিল মডেল হাই স্কুল এন্ড কলেজের শারীরিক শিক্ষার শিক্ষক আবুল হোসেন বিষয়টিতে জটিলতা দেখেননি। তিনি সাবলীল ভাবেই বলেছিলেন, ‘আমাদের স্টুডেন্টসরা কখনো এমন অভিযোগ করেনি। হ্যাঁ পড়া দেওয়া হয়। হোমওয়ার্ক সেটা। সিলেবাস অনুয়ায়ী যা আছে আমরা সব পড়াই।’

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শরীর চর্চার শিক্ষকের সাথে ক’দিন আগেই এই বিষয়ে কথা হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘শুধু ষষ্ঠ শ্রেণির বইটা দেখেন। একদম ছোট ক্লাসের বই। সেই পড়াগুলো সন্তানতুল্য ছাত্র ছাত্রীদের বিস্তারিত বললে কেমন দেখা যায় না!’

অথচ সন্তানরা যে তার কাছে শিখবেন এটা তিনি ভুলে গেছেন। 

এডুকেশনাল সাইকোলজিস্ট নইমা আক্তার বলেন, ‘কিশোর-কিশোরী উভয়ের বয়ঃসন্ধির বিষয়ে পরিষ্কার ধারণা রাখা অতিব জরুরি। এটি মানসিক স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব বিস্তার করে।’

মনোবিদ নঈমা আক্তার এক্ষেত্রে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর দূরত্ব কমানো ও আন্তরিকতা বাড়ানো জরুরি বলে মনে করেন।

শিক্ষককেই হতে হবে বাবা মা, শিক্ষককেই হতে হবে বন্ধু। শিক্ষকদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দিলে সমস্যাটা লাঘব হতে পারে বলে অভিমত তার।

এ বিষয়ে ‘হ্যালোর’ ক্ষুদে সাংবাদিক নানজীবা খানের সঙ্গে কথা হয়।

সে বলে, ‘এ ক্ষেত্রে ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা একটু বেশি সাফার করছে। সমাজ পরিবর্তন না হওয়াতে অনেক মেয়ের কাছেই বিষয়টি এখনও ট্যাবু হয়ে আছে যেখানে ছেলেরা অনেকটাই স্বাভাবিক ভাবে নিচ্ছে।

 ‘মেয়েদের জন্য একটু যত্নশীল পরিবেশ দরকার। দেশের ভবিষ্যতের কথা ভেবে মেয়েদের জন্য শিক্ষামন্ত্রণালয় এতটুকু আয়োজন করতে সম্মত হবে আশা প্রকাশ করে নানজীবা।

Related Stories

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com