পল্লীকবি জসীম উদ্দীনের সমাধিতেও একটি ডালিম গাছ আছে। যা মনে করিয়ে দেয়, কবির লেখা বিখ্যাত কবিতা ‘কবর’।
১৩ মার্চ কবির ৪১তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৭৬ সালে ঢাকায় মারা যান তিনি। পরে তাকে গোবিন্দপুরে কবর দেয়া হয়।
বাংলার গ্রামীণ-প্রকৃতি আর পল্লীর সাধারণ মানুষ নিয়ে গড়া তার রচনা। তার গ্রামীণ জীবনকেন্দ্রিক কাব্য ও সাহিত্য হাজার বছরের আবহমান বাংলার পল্লী নতুন প্রাণ পায়।
‘তুমি যাবে ভাই– যাবে মোর সাথে, আমাদের ছোট গাঁয়,
গাছের ছায়ায় লতায় পাতায় উদাসী বনের বায়’-
বহুশ্রুত এই লাইন দুটি জসীম উদ্দীন রচিত ‘নিমন্ত্রণ’ কবিতায় এক কিশোর তার গ্রামের অপরূপ বর্ণনা দিয়ে বন্ধুকে নিমন্ত্রণ জানাচ্ছে গ্রামে যেতে।
নকশী কাঁথার মাঠ ও সোজন বাদিয়ার ঘাট কবির শ্রেষ্ঠ দুটি রচনা। তার লেখায় বারবার ফিরে এসেছে পল্লীর মাঠ-ঘাট-মানুষ।
তার উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ রাখাল, নকশী কাঁথার মাঠ, সোজন বাদিয়ার ঘাট, হাসু ইত্যাদি। এছাড়াও রচনা করেছেন পদ্মাপার, বেদের মেয়ে, পল্লীবধূ, মধুমালা, গ্রামের মেয়ে ইত্যাদি নাটক। আত্মকথা, উপন্যাস, ভ্রমণ কাহিনী, জারি, মুর্শিদী গান এবং বাঙালির হাসির গল্পও লিখেছেন তিনি।
১৯০৩ সালের পহেলা জানুয়ারি ফরিদপুর জেলার তাম্বুলখানা গ্রামে জন্ম নেন। স্কুল শিক্ষক আনসার উদ্দিন মোল্লা ও আমিনা খাতুনের সন্তান তিনি।
ফরিদপুর ওয়েলফেয়ার স্কুল ও ফরিদপুর জেলা স্কুলে পড়াশুনা করে কেটেছে তার শৈশব। এখান থেকেই ১৯২১ সালে তিনি প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। পরে ১৯২৯ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ এবং ১৯৩১ সালে এমএ পাস করেন।
পরে ১৯৩৩ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. দীনেশ চন্দ্র সেনের অধীনে রামতনু লাহিড়ী গবেষণা সহকারী পদে তার কর্মজীবনের শুরু। পরে ১৯৩৮ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগের প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন।
১৯৬৯ সালে রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কবি জসীম উদ্দীনকে ডিলিট উপাধিতে ভূষিত করে। এছাড়া ১৯৫৮ সালে প্রেসিডেন্টস এওয়ার্ড ফর প্রাইড অফ পারফরমেন্স, ১৯৭৬ সালে একুশে পদক, ১৯৭৮ সালে স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার পান।