ইন্টারনেটে আমাদের একটা বড় জগৎ রয়েছে। বাস্তবে আমাদের যেমন বন্ধু বা পরিচিতজন রয়েছে। ঠিক তেমনি ইন্টারনেটের মাধ্যমেও আমরা বন্ধুত্ব করি, পরিচিত হই।
বাস্তবে যেমন আমরা পাঠাগারে যাই বা বই পড়ি। ঠিক তেমনি জ্ঞান অর্জন বা তথ্য সংগ্রহের জন্য আমরা ইন্টারনেট ব্যবহার করি, ই-বুক পড়ি বা বিভিন্ন ওয়েবসাইট দেখে থাকি।
একইভাবে বাস্তব জীবনে আমাদের যেমন নিরাপত্তার প্রয়োজন রয়েছে তেমনি ইন্টারনেটেও আমাদের নিরাপদ থাকাটা জরুরি।
নিরাপদ ইন্টারনেট বিষয়টিকে নির্দিষ্ট করে কোনো সংজ্ঞা দিয়ে প্রকাশ করা যায় না। তবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের তথ্য, মতামত বিশ্লেষণ করে এক ধরনের ধারণা পাওয়া যায়।
ইউনিসেফের ‘দ্য স্টেট অব দ্য ওয়ার্ল্ডস চিলড্রেনস ২০১৭- চিলড্রেন ইন অ্যা ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড’ প্রতিবেদনে এ বিষয়ে কিছু আলোচনা রয়েছে। ডিজিটাল জগতে যদি শিশুরা কোনো হয়রানির শিকার না হয়, তার তথ্য যদি সুরক্ষিত থাকে এবং ইন্টারনেটের মাধ্যমে নতুন সুযোগের সৃষ্টি হয় তবে সেটিকে নিরাপদ ইন্টারনেট বলা যায়৷ শিশুর জন্য নিরাপদ ইন্টারনেট নিশ্চিতে তাই সরকারসহ সব প্রতিষ্ঠানকে আন্তরিকভাবে কাজ করতে হবে।
ইউনিসেফ বলছে, প্রতিদিন এক লাখ ৭৫ হাজারেরও বেশি বা প্রতি আধা সেকেন্ডে একজন শিশু প্রথমবারের মতো অনলাইন জগতে প্রবেশ করে। ইউনিসেফ ও ফেইসবুকের উদ্যোগে ২০১৮ সালে ‘শিশু-কিশোরদের জন্য নিরাপদ ইন্টারনেট’ প্রচারাভিযানে জানানো হয়, বাংলাদেশে যারা ইন্টারনেট ব্যবহার করছে তাদের প্রতি পাঁচজনের মধ্যে একজনের বয়স ১৮ বছরের নিচে। ফেসবুকে ইউনিসেফ একটি জরিপও পরিচালনা করে। যেখানে ১৩ থেকে ১৮ বছর বয়সী ১১ হাজার ৮২১ জন অংশগ্রহণ করে।
এই জরিপে দেখা যায়, অংশগ্রহণকারীদের ৮১ দশমিক দুই শতাংশ বলেছে, তারা প্রতিদিনই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে। ৯০ শতাংশ উত্তরদাতাই ইন্টারনেট ব্যবহার করে মোবাইল থেকে। আর বাড়িতে ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ থেকে ইন্টারনেট ব্যবহার করে ছয় দশমিক ৬ শতাংশ।
জরিপের পাঁচ দশমিক ১ শতাংশ উত্তরদাতা অনুমতি ছাড়া অন্যের ব্যক্তিগত তথ্য বা ছবি প্রকাশের কথা স্বীকার করেছে। তিন দশমিক ৩ শতাংশ বলেছে, অনুমতি নেওয়া অত গুরুত্বপূর্ণ নয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হয়রানি বা উত্ত্যক্তের শিকার হওয়ার কথা বলেছে ১৩ শতাংশ শিশু।
১৩ দশমিক ছয় শতাংশ অংশগ্রহণকারী বলেছে, অপরিচিত কেউ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যক্তিগত ছবি বা পারিবারিক তথ্য চাইলে তাকে সামান্য তথ্য দিলে কোনো ক্ষতি হবে বলে তারা মনে করে না।
আর ৫২ শতাংশ বলেছে, অপরিচিতি কেউ অনলাইনে বন্ধু হতে চাইলে তাতে তাদের আপত্তি নেই। জরিপে অংশ নেওয়া অধিকাংশ শিশু-কিশোরই নিরাপদ ইন্টারনেটের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছে। অনলাইনে অবাঞ্ছিত বা ক্ষতিকর জিনিসগুলো থেকে রক্ষা পেতে তা দরকার বলে মনে করে তারা।
প্রতিবেদকের বয়স: ১১। জেলা: বাগেরহাট।