নবান্ন উৎসব বাঙালির হাজার বছরের পুরোনো ঐতিহ্য। এই উৎসবে সবাই ধর্ম-বর্ণ ভুলে একসঙ্গে আনন্দ করে।
Published : 16 Nov 2024, 11:24 AM
বাংলার কৃষকরা ধান চাষ ও ফসল ঘরে তোলার সময় নানা ধরনের আচার-অনুষ্ঠান বা উৎসব করে আসছেন। এই আয়োজনগুলোর মধ্যে নবান্ন সবচেয়ে আনন্দের।
‘নবান্ন’ মানে ‘নতুন ভাত’ বা ‘নতুন খাবার’। নতুন ধান কাটার পর সেই ধানের চাল দিয়ে প্রথম রান্না উপলক্ষে নবান্ন উৎসব হয়। সাধারণত অগ্রহায়ণ মাসে যখন আমন ধান পাকে, তখনই এই উৎসব পালিত হয়।
কার্তিক আর অগ্রহায়ণ মাস মিলে হেমন্ত ঋতু। হেমন্তের প্রথম মাস পার হওয়ার পর ধান কাটার সময় কৃষকের ঘরে আনন্দের ঢল নামে। এসময়ে ধান ঘরে তোলা, পিঠা-পায়েস খাওয়া, আর উৎসবের ধুম লেগে যায়। গ্রাম ভরে ওঠে নতুন আনন্দে।
আগে এসময়টাতে ঢেঁকিতে ধান ভাঙার শব্দে গ্রাম মুখর থাকত। এখন যান্ত্রিক জীবনের প্রভাবে সেই ঢেঁকির শব্দ আর শোনা যায় না। তবে নতুন চাল দিয়ে ভাত, পিঠা আর পায়েসের আনন্দ এখনো দেখা যায়।
নবান্ন উৎসব বাঙালির হাজার বছরের পুরোনো ঐতিহ্য। এই উৎসবে সবাই ধর্ম-বর্ণ ভুলে একসঙ্গে আনন্দ করে।
রাজধানী ঢাকায় নবান্ন উৎসব আনুষ্ঠানিকভাবে পালন শুরু হয় ১৯৯৮ সাল থেকে। প্রতিবছর পহেলা অগ্রহায়ণ ঢাকায় নানা স্থানে, যেমন রমনার বটমূলে, ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবরে, আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগে নবান্ন উৎসব আয়োজন করা হয়।
তবে এখন গ্রামে নবান্ন উৎসব খুব কম দেখা যায়। অনেকেই এই ধরনের উৎসব পালন করতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। এর কারণ হতে পারে যান্ত্রিক জীবন, শহরের প্রভাব, আর মানুষের ব্যস্ততা।
কিন্তু নবান্ন ও অন্যান্য গ্রামীণ উৎসব হারিয়ে গেলে আমাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির বড় অংশ হারিয়ে যাবে। এগুলো শুধু উৎসব নয়, আমাদের কৃষি অর্থনীতি ও গ্রামের প্রতি ভালোবাসার প্রতীক। এছাড়াও নিজেদের এই উৎসবগুলো আমাদের সামাজিক সম্পর্ককে আরও মজবুত করে।
প্রতিবেদকের বয়স: ১৭। জেলা: ঢাকা।