গাজায় শিশুরা যুদ্ধের দিনগুলো অতিক্রম করেছে বোমার শব্দ, ধ্বংসযজ্ঞ, খাবারের অভাব এবং নিরাপত্তাহীনতার মধ্য দিয়ে।
Published : 27 Jan 2025, 04:43 PM
সোয়া এক বছর ধরে চলা রক্তক্ষয়ী সংঘাতে বিধ্বস্ত ফিলিস্তিনের গাজায় যখন যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে, তখন বাসিন্দারা স্বাভাবিক জীবনে ফেরার জন্য এক নতুন লড়াইয়ে নেমেছে।
ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে হওয়া গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তি যেকোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে, এমন আশঙ্কা মাথায় নিয়েই বাসিন্দারা নিজ নিজ বাড়িঘরে ফেরার চেষ্টা করছে।
কিন্তু ধ্বংসস্তূপের মধ্যে নিজের ঘরটি অক্ষত আছে তো? শিশুরা কি তাদের স্কুল, খেলার মাঠ আর ফেলে আশা বইখাতার দেখা পাবে?
জাতিসংঘের বরাত দিয়ে রোববার প্রকাশিত বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গাজা যুদ্ধে ১৩ সহস্রাধিক শিশুর প্রাণহানির পাশাপাশি আহত হয়েছে হাজার পঁচিশেক।
একই সংবাদমাধ্যমের আরেকটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ১৫ মাসের এই সংঘাতে উত্তর গাজার ৭০ শতাংশ ভবন এবং গাজা সিটির ৭৪ শতাংশ ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়েছে।
এসব প্রতিবেদনই বলে দেয় গাজার শিশুরা নিজ আঙিনায় ফিরে নতুন এক লড়াইয়ের মুখোমুখি হবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, ভেঙে পড়া ভবনগুলো থেকে অনেক ধুলা ছড়িয়ে পড়েছে, সেগুলো থেকে বের হওয়া বিপজ্জনক উপকরণ বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে বা পানির সঙ্গে মিশে যাচ্ছে। এতে গাজার মানুষ গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে।
গাজায় শিশুরা যুদ্ধের দিনগুলো অতিক্রম করেছে বোমার শব্দ, ধ্বংসযজ্ঞ, খাবারের অভাব এবং নিরাপত্তাহীনতার মধ্য দিয়ে। এসব কারণে তারা যে ভয় ও হতাশা নিয়ে বড় হচ্ছে, তা সহজেই অনুমেয়।
২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে জাতিসংঘ শিশু তহবিল- ইউনিসেফ জানায়, আনুমানিক ১৭ হাজার শিশু যুদ্ধের কারণে পরিবার থেকে আলাদা হয়ে গেছে বা একা হয়ে পড়েছে। এছাড়া, প্রায় সব শিশুর মানসিক সহায়তার প্রয়োজন বলে তারা মনে করছে।
এই শিশুরা যে স্কুলের আঙিনায় নিজের শিক্ষাজীবন শুরু করেছিল সেই প্রতিষ্ঠানগুলো অক্ষত আছে কিনা সেটাও এখন একটি বড় প্রশ্ন। এছাড়া শিক্ষকের অভাব, পাঠ্যপুস্তকের সংকট এবং স্বাভাবিক পরিবেশের অনুপস্থিতিতে শিশুরা কীভাবে নতুন করে পড়াশোনায় মনোযোগ দেবে তা নিয়ে অনিশ্চয়তা তো আছেই।
যুদ্ধবিরতির ঘোষণায় গাজাবাসী হয়ত ক্ষণিকের জন্য আশার আলো দেখছে। কিন্তু তাদের জীবনে এখনো অজস্র চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে।
প্রতিবেদকের বয়স: ১৩। জেলা: ঢাকা।