'শহিদ জননী জাহানারা ইমাম তার একাত্তরের দিনগুলি বইয়ে একাধিকবার শেখ মুজিবের কথা উল্লেখ করেছেন। যুদ্ধের অনুপ্রেরণা যে মুজিব, সেটা মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক তার এই বইটি পড়লেও ধারণা পাওয়া যায়'
Published : 20 Aug 2024, 04:28 PM
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের জাতির পিতা। প্রাথমিক স্কুল থেকেই পাঠ্যবইয়ের পাতায় তার সঙ্গে আমাদের পরিচয়। আমরা জেনেছি, শেখ মুজিব আর আমাদের স্বাধীনতা এক সুতায় গাঁথা।
কিন্তু কিছু দিন আগে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে থাকা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যগুলো হামলার শিকার হয়। পুড়িয়ে দেওয়া হয় বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজড়িত ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়ি।
হয়ত এগুলো ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ কিংবা চাটুকারদের অতিরিক্ত চাটুকারিতার ফল। কিন্তু তিনি তো আমাদের জাতির পিতা!
এক বন্ধুকে প্রশ্ন করেছিলাম, জাতির পিতার প্রতি এমন অসম্মান কেন? সে বলেছিল, “তুমি তো বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় বিষয়ে এ প্লাস পেয়েছ, বঙ্গবন্ধুকে তোমার ভালো লাগবেই। তুমি ভুল ইতিহাস পড়েছ, বুঝেছ?”
তার কথার অর্থ হলো আমাদের পাঠ্য বইতে জাতির পিতার ইতিহাস ভুল ছিল। তাই ভাবলাম অন্যান্য বইয়ের পাতায় সাহিত্যিকগণ শেখ মুজিবকে কিভাবে উপস্থাপন করেছেন সেটাই দেখি।
শহিদ জননী জাহানারা ইমাম তার একাত্তরের দিনগুলি বইয়ে একাধিকবার শেখ মুজিবের কথা উল্লেখ করেছেন। যুদ্ধের অনুপ্রেরণা যে মুজিব, সেটা মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক তার এই বইটি পড়লেও ধারণা পাওয়া যায়।
সেলিনা হোসেনের লেখা উপন্যাস 'কাকতাড়ুয়া'। গ্রামের দুরন্ত ঘরছাড়া কিশোর বুধা বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শুনে ক্ষিপ্ত হয় পাকিস্তানি হানাদারদের বিরুদ্ধে। সে ভাবে সে বঙ্গবন্ধু হবে। সে তার সঙ্গীদেরও বলে তাকে বঙ্গবন্ধু বলে ডাকতে।
তখন সবাই তাকে নিয়ে তামাশা করলেও মুক্তিযোদ্ধা শিল্পী শাহাবুদ্দিন মিলিটারির বাঙ্কার উড়ানোর প্রস্তাব নিয়ে এসে বুধাকে বঙ্গবন্ধু বলে ডাক দেয়। মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক এই গল্পে সরাসরি উপস্থিত না থেকেও অনেক বড় ছায়া বিস্তার করে আছেন বঙ্গবন্ধু।
আবুল মনসুর আহমদের 'আমার দেখা রাজনীতির পঞ্চাশ বছর' বইয়ের একটা বড় অংশ জুড়ে আছেন বঙ্গবন্ধু। তিনি ছিলেন বঙ্গবন্ধুর অন্যতম ঘনিষ্ঠ একজন নেতা। বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পরের ঘটনাবলী নিয়েও তার সেই বইতে একটি অধ্যায় আছে।
মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক যেকোনো বই পড়ি না কেন, বঙ্গবন্ধু তাতে আছেন সম্মানের আসনে। শেখ হাসিনার শাসন নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও ভুলে গেলে চলবে না শেখ মুজিব আমাদের জাতির পিতা। আমি চাই না কন্যার ভুলের জন্য পিতার এমন অসম্মান হোক।
প্রতিবেদকের বয়স: ১৬। জেলা: ঢাকা।