
মোখা নিয়ে আতঙ্ক থাকলেও আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে গড়িমসি করছেন পটুয়াখালীর বাউফলের কালাইয়া ইউনিয়নের অনেকেই।
শনিবার বিকেলে তেতুলিয়া নদীর পাড় ঘেষে গড়ে ওঠা কালাইয়া ইউনিয়ন ঘুরে উপকূলীয় মানুষের সঙ্গে কথা বলে হ্যালো ডট বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।
স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, "বাড়িঘর ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে যাব না, ইনশাআল্লাহ বাড়িতেই থাকব মেয়ে ছেলে নিয়া।"
ঘূর্ণিঝড় সম্পর্কে জানেন কিনা এমন প্রশ্নে বলেন, "না জানি না।
ঘূর্ণিঝড়ের নাম জানেন না গৃহবধূ পুতুলী রাণী। তিনি বলেন, "আমার বাড়ি খালের ধারে। ৫-৭ ফুট পানি উঠলে আমার সমস্যা হবে না, আমার ভিটি উঁচু। আমার সমস্যা নেই, আশ্রয় কেন্দ্রে যাব না।"
তবে আগে বেশ কয়েকবার ঘূর্ণিঝড়ে বেশ ক্ষয়ক্ষতি হওয়ায় এবার সতর্ক আছেন কেউ কেউ।
এ ব্যাপারে একজন বলেন, "আমরা গেল কয়েকটি ঘূর্ণিঝড় এই জায়গায় (বাড়িতে) কাটাইছি। আমাদের অনেক ক্ষয়ক্ষতি হইছে। এখন যখন ঘূর্ণিঝড় হয় তখন আমরা আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যাই৷ আমাদের গবাদিপশু এবং ছেলে মেয়েদের নিয়ে আমরা আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যাই।"
তবে ছোট ছোট শিশুরা বেশ সতর্ক৷ এক শিশু বলে, "ঘূর্ণিঝড় আসতে আছে আমরা শুনেছি। আমার মা-বাবা বলেছে। ঘূর্ণিঝড়ে পানি উঠবে বেশি, তাই আমরা গরু বাছুর নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে যাব।"
নদীর পাশে বাড়ি হওয়ায় সন্ধ্যে হলেই বাবা মার সঙ্গে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার কথা বলে আরেক শিশু।
সে বলে, "আমগোর বাড়ি খালের ধারে। সন্ধ্যা হইলেই যামু গিয়া।"
ইউনিয়নটির গুচ্ছগ্রাম ঘুরে কথা বলে জানা যায়, কিছু সংখ্যক মানুষ এখনও ঘূর্ণিঝড় সম্পর্কে জানেন না। আবার কেউ কেউ জানলেও তেমন গুরুত্ব না দিয়ে বিষয়টি এড়িয়ে যান। এ এলাকার বাড়িগুলো সামান্য জোয়ারের পানিতেই তলিয়ে যায়। ঘরগুলোও বেহাল।
এদিকে উপজেলার ১৫ টি ইউনিয়নের বিদ্যালয় ভবন ও আশ্রয়কেন্দ্র গুলোকে খুলে দেয়া হয়েছে।
প্রত্যেকটি ইউনিয়নে মেডিকেল টিমসহ স্বেচ্ছাসেবীদের প্রস্তুত রেখেছে উপজেলা প্রশাসন। ইতিমধ্যে একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় এসব ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় উপজেলা প্রশাসনের পাশাপাশি সতর্কবার্তা জানিয়ে মাইকিং করছে মানবতার বন্ধু নামক একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।
বিকেল থেকেই উপজেলার বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় তারা মাইকিং করে তারা।
জানা যায়, কক্সবাজার উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’। ১৭০ কিলোমিটার গতির ঘূর্ণিঝড়টি শনিবার সন্ধ্যার দিকেই কক্সবাজার ও এর কাছাকাছি উপকূলীয় এলাকায় এ ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রভাগের প্রভাব পড়তে শুরু করবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া কার্যালয়।
এ অবস্থায় পায়রা সমুদ্রবন্দরের জন্য থাকছে ৮ নম্বর সতর্কতা সংকেত।
প্রতিবেদকের বয়স: ১৬। জেলা: পটুয়াখালী।