জয়পুরহাটের বিশ্বাস পাড়া মহল্লায় তার বাড়ি।
মা আসমা আক্তার হ্যালোকে জানান, বখাটেরা তার মেয়েকে খুব বিরক্ত করে। তাই বাধ্য হয়েই বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
তিনি বলেন, "বিয়ে দিলেই ঝামেলা শেষ হয়ে যাবে। নয়ত কোনো অঘটন ঘটলে কে দেখবে?
"গরিবের মেয়ে ও। খারাপ কিছু হলে ভবিষ্যৎ কী হবে?"
তিনি আরও জানান, তার স্বামী আব্দুল কাদের ভাঙাড়ি বেচে সংসার চালান। অভাবের সংসারে কোনো সন্তানকেই লেখাপড়া করাতে পারেননি।
ওই শিশুর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ওরা চার ভাইবোন। ও সবার বড়। ও এবং ছোট দুই ভাই স্কুলে পড়লেও প্রাথমিক পার হতে পারেনি কেউই।
মেজ ভাই আজাদ স্থানীয় একটা হোটেলে কাজ করে বলে জানায় ও।
বিয়ের ব্যাপারে মেয়েটি বলে, "বাবা মা আমাদের দ্যাশে আমার বিয়ে ঠিক করেছে। আমি সংসার করব।"
ডিগ্রি পড়ুয়া স্থানীয় তানজীয়া জেসমিন বলেন, "সন্তানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার সামর্থ্য এদের নেই। এ কারণে গ্রামাঞ্চলে অনেক শিশুর বিয়ে হয়ে যায়।"
বাংলাদেশে এখনও ১৬ বছরের আগে ৬৫ শতাংশ মেয়ের বিয়ে হচ্ছে বলে উঠে এসেছে 'মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন' পরিচালিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে।
এদিকে ২০৪০ সালের আগেই দেশ থেকে বাল্যবিয়ে নির্মূল হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী দীপু মনি।
১১ জানুয়ারি সোমবার ভারত মহাসাগরসহ উপকূলীয় বিভিন্ন দেশের নৌবাহিনীর কর্মকর্তাদের স্ত্রীদের অংশগ্রহণে বাংলাদেশি নারীদের ক্ষমতায়ন বিষয়ে ঢাকায় আয়োজিত এক কর্মশালায় তিনি এ ঘোষণা দিয়েছেন।
তিনি বলেন, "বর্তমান সরকারের রাজনৈতিক অঙ্গীকারের কারণে বাংলাদেশে নারীরা শিক্ষা, স্বাস্থ্য, চাকরি ও রাজনীতিতে আগের চেয়ে ভালো করছে।
"কিন্তু এখনও বাল্যবিয়ে চলছে। এটা মেয়েদের ভবিষ্যৎ সক্ষমতাকে ছিনিয়ে নিচ্ছে।"
বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে দেশে আরও কঠোর আইন প্রণয়ন করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
বাল্যবিয়ে বন্ধে তৈরি ১৯২৯ সালের আইনে এক মাসের জেল ও এক হাজার টাকা জরিমানার বিধান ছিল। পরে তা সংশোধন করে এক মাস জেল ও ১০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান করা হয়।
তারপরও বাল্যবিয়ের ঘটনা ঘটায় শাস্তির পরিমাণ বাড়িয়ে দুই বছরের কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান করা হয়েছে।