বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রজনন স্বাস্থ্যের সংজ্ঞা হিসেবে বলেছে, প্রজনন স্বাস্থ্য শুধুমাত্র প্রজননতন্ত্রের কার্য এবং প্রজনন প্রক্রিয়ার সাথে সম্পর্কিত রোগ বা অসুস্থতার অনুপস্থিতিকেই বোঝায় না। এটা শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক কল্যাণকর এক পরিপূর্ণ সুস্থ্য অবস্থার মধ্য দিয়ে প্রজনন প্রক্রিয়া সম্পাদনের একটি অবস্থাকে বোঝায়।
অর্থাৎ প্রজনন প্রক্রিয়ায় বাধা তৈরি করে এমন শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক সব বিষয়েই এতে যুক্ত। উদাহরণ হিসেবে বলতে পারি- বাল্যবিয়ে। এটি বাল্যবিয়ের শিকার মা ও তার শিশুকে ভয়াভহ ঝুঁকিতে ফেলতে পারে।
তাছাড়া কেউ যদি সন্তান জন্মদানে অনীহা জানায় তাকে জোরপূর্বক বাধ্য করা, অর্থাৎ তার মানসিক স্বাস্থ্যকে আঘাত করাও প্রজনন স্বাস্থ্যের মধ্যে পড়ে।
২০২১ সালে প্রকাশিত বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, শিক্ষা বিভাগ মাধ্যমিক পর্যায়ের সব স্কুলকে বয়ঃসন্ধিকালীন যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য বিষয়ক শিক্ষা দেয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যা ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকেই কার্যকর হবে। তবে কতটুকু কার্যকর হয়েছে তা বোঝার জন্য আরও সময় প্রয়োজন।
এখনো অনেক স্কুলেই শিক্ষকরা যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য নিয়ে পড়াতে সংকোচ বোধ করেন। খুবই সাধারণ একটি ধারণা ছাড়া এর বেশি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করতে চান না।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে ১০ থেকে ১৯ বছর পর্যন্ত বয়ঃসন্ধিকাল। এ সময়টাতে ছেলে-মেয়েদের শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন হয়। এই সময়টাতেই তারা প্রজননক্ষম হয়।
কিন্তু কিশোর-কিশোরীরা প্রজনন স্বাস্থ্য সম্পর্কে প্রাতিষ্ঠানিক জ্ঞান যে খুব বেশি রাখে না, তা বলাই যায়। প্রজনন অঙ্গের রোগ, গর্ভধারণের সঠিক উপায়, নবজাতকের জন্য করণীয়, শিশুবিয়ের ঝুঁকি ইত্যাদি অনেক কিছুই থেকে যাচ্ছে জানার বাইরে। নিজের স্বাস্থ্য সম্পর্কে জানার পেছনে বাধা থাকা উচিত নয়। স্বাভাবিক একটি প্রক্রিয়াকে এড়িয়ে চলার অর্থ নিজেদের জন্যই বিপদ ডেকে আনা।