মহামারিকালের ঈদে অনিশ্চয়তায় ক্ষুদ্র খামারিরা

করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে দ্বিতীয় কোরবানি ঈদ পালন করতে যাচ্ছে দেশবাসী। তবে এ উৎসব ক্ষুদ্র পশু খামারিদের মনে খুশির জোয়ার নয়, বরং শঙ্কার কালো মেঘ নিয়ে এসেছে। করোনাভাইরাসের প্রভাবে গত বছরের মতো এ বছরও পশু কোরবানি কমে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা।
মহামারিকালের ঈদে অনিশ্চয়তায় ক্ষুদ্র খামারিরা

হ্যালোকে দেওয়া প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্যমতে ২০১৬ সালে পশু কোরবানি করা হয়েছিল ৯৮ লক্ষ ১৩ হাজার ৭২১ টি পশু। এরপর ২০১৭ সালে সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় এক কোটি চার লক্ষ ২১ হাজার ৯৫৬। ২০১৮ সালে এক কোটি পাঁচ লক্ষ ৬৯ হাজার ৭০ এবং ২০১৯ সালে এক কোটি ছয় লক্ষ ১৪ হাজার ২৮১ টি পশু কোরবানি করা হয়।

ঊর্ধ্বমুখী এ সংখ্যা মহামারির ধাক্কায় ২০২০ সালে কমতে শুরু করে । ২০২০ সালের ঈদ-উল-আজহাতে  হওয়া পশুর সংখ্যা প্রায় ১২ লক্ষ কমে দাঁড়ায় ৯৪ লক্ষ ৫০ হাজার ২৬৩ তে। অর্থাৎ, গত কোরবানি ঈদে জবাই হওয়া পশুর সংখ্যা শেষ পাঁচ বছরে সর্বনিম্ন।

এ ব্যাপারে প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তরের উপপরিচালক (খামার) জিনাত সুলতানা হ্যালোকে বলেন, “এটা কোভিডের কারণে হয়েছে। এবারও আমরা এমন শঙ্কা করছি।”

কোরবানি হওয়া পশুর সংখ্যা কমে যাওয়া দেশের খামারিদের জন্য হুমকি হিসেবে দেখছেন তিনি। তিনি বলেন, “এটা খামারিদের জন্য বড় হুমকি। কারণ তারা সারা বছর এই ঈদকে লক্ষ্য করে পশু পালন করে। পশু বিক্রি না হলে এটা আরেক বছর রাখতে হয়। সব পশু এক বছর রাখা যায় না। তখন জবাই করে মাংস বিক্রি করে দেয়। কিন্তু ঈদে যে লাভটা হয়, মাংস বিক্রি করলে সেই লাভটা হয় না।”   

ঠাকুরগাঁও জেলার শিবগঞ্জের ইমন এগ্রোর মালিক বলেন, “আমার ২০০ গরু আছে। আমি ব্যাঙ্কের টাকা লোন লিয়ে ২০০ গরু কিনছি। আমি এখন দিশেহারা। বাইরের পার্টি (ক্রেতা) আসতেছে না। এখন গরু নিয়া আমি খুব বিপাকে আছি। দুশ্চিন্তায় আছি।” 

তবে আশাবাদী ঠাকুরগাঁও জেলার খামারি খুরশিদ আলম শাওন। তিনি হ্যালোকে বলেন, “হাটগুলো বন্ধ ছিল, বাইরের পার্টি আসে নাই- একারণে হয়তো একটু কম দামে বিক্রি করতে হতে পারে। তবে আমি আশাবাদী।”

তিনি জানান, লকডাউনের কারণে অনেক সময় পশুর খাবারের দাম বেড়ে যায়। তখন পশু পালনে খরচও বেশি হয়।  আবার অনেক সময় ব্যবসায়ীরা বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দাম বাড়িয়ে দেয়।

তবে চিন্তামুক্ত আছেন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে কোরবানির পশু বিক্রেতারা। এ ব্যাপারে কয়েক জন বিক্রেতার সঙ্গে যোগাযোগ করে দেখা গেছে তারা অনলাইনে পশু বিক্রি করছেন এবং এখন পর্যন্ত বেশ ভালো অবস্থায় আছেন। 

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com