পাকিস্তানি বর্বরতার সাক্ষী ওয়াপদা টর্চার সেল (ভিডিওসহ)

একাত্তরে পাকবাহিনীর বর্বরতার চিহ্ন বুকে নিয়ে বরিশালের কীর্তন খোলার তীরে দাঁড়িয়ে আছে দক্ষিণাঞ্চলের সবচেয়ে বড় টর্চার সেল ‘ওয়াপদা টর্চার সেল’।
পাকিস্তানি বর্বরতার সাক্ষী ওয়াপদা টর্চার সেল (ভিডিওসহ)

এখানে পূর্বপুরুষদের আত্মত্যাগ আর মুক্তিযুদ্ধের গৌরবজ্জ্বল ইতিহাস খুঁজতে আসেন নতুন প্রজন্মের অনেকেই।

ঘুরতে আসা শিক্ষার্থী তাওশীন মিতুল হ্যালোকে বলে, “মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন প্রেক্ষাপটগুলো এতো সুন্দর চিত্রকর্মের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হবে তা আমি কল্পনাও করতে পারি নাই। যদি এটা সংরক্ষণ করা হয় তবে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে ইতিহাসের অমূল্য নিদর্শন হয়ে থাকবে।"

পাকিস্তানি বাহিনীর নির্মম অত্যাচারকে শব্দের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। ত্রিশ গোডাউন সংলগ্ন এই টর্চার সেলের লোহার গেট দিয়ে প্রবেশ করলেই সারি সারি সাউন্ড বক্স থেকে স্বাধীনতাকামী নির্যাতিত মানুষের বীভৎস আর্তচিৎকার ভেসে আসে, কখনো বা শোনা যায় নৃশংস পাকিস্তানি সেনাদের অট্টহাসি আবার কখনো বা শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের ‘জয় বাংলা’ বলার স্বাধীনতাকামী চিৎকার।

ওয়াপদা বধ্যভূমির সাউন্ড ম্যানেজমেন্ট ইনচার্জ আরিফুর রহমান সৈকত হ্যালোকে বলেন, “২০১৮ সাল থেকে এখানে সংস্কারের কাজ শুরু হয়।”

জানা যায়, কীর্তনখোলা ঘেঁষা নয়নাভিরাম এই ওয়াপদা কলোনি ছিল অপেক্ষাকৃত একটি নির্জন এলাকা। এ কারণেই পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তাদের ক্যাম্প ও এখানকার একাধিক ভবনে গণহত্যার টর্চার সেল স্থাপন করে। কারো কারো মতে পাঁচ থেকে সাত হাজার বাঙালিকে হত্যা করা হয় এখানে।

স্থানীয়রা জানান, এই বাঙ্কারগুলোতে, শারীরিক, পাশবিক নির্যাতনের পাশাপাশি প্রতিদিনই অন্তত ২৫ থেকে ৩০ জনকে গুলি করে হত্যা করা হতো। যাদের মৃতদেহ পার্শ্ববর্তী ব্রিজ থেকে সাগরদী খালে নিক্ষেপ করা হতো।  

এখান থেকেই মূলত পাকিস্তানিরা ঝালকাঠি, পটুয়াখালী এবং ভোলাতে অপারেশন পরিচালনা করত। এই বধ্যভূমি ও গণহত্যার করুণ স্মৃতি ধরে রাখতে ওয়াপদা কলোনির দক্ষিণ পাশে কীর্তনখোলা নদীর তীরে বধ্যভূমির স্মৃতি ভাস্কর্য নির্মাণ করা হয়েছে এবং একইসাথে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে ওয়াপদা টর্চার সেল, বাঙ্কারসহ সেখানকার নানা স্মৃতি চিহ্ন ধরে রাখতে এই এলাকাকে বিশেষভাবে সংস্কার এবং দর্শনীয় করে তোলা হয়েছে।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com